ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

আমি তো সমালোচনার ঊর্ধ্বে নই: মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
আমি তো সমালোচনার ঊর্ধ্বে নই: মমতা

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার লেখা কবিতা নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে।

সমালোচনাও কম হয় না। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) তিনি এই সমালোচনা-বিতর্কের জবাব দিলেন ৪৬তম কলকাতা বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে।  

মমতা বলেন, আমি খুব ক্ষুদ্র মানুষ। আমি তো সমালোচনার ঊর্ধ্বে নই। কেউ আমার সমালোচনা করলে খুশি হই। এর কারণ সমালোচনা থেকে শিখতে পারি।  

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, বই শুধু বই নয়, বই হলো মানুষের জীবন। বই হচ্ছে বাস্তব চেতনা, বই নতুন জিনিস জানতে শেখায় এবং আবিষ্কার করতে শেখায়। অনেক কিছু শেখার আছে।  

তিনি বলেন, আমরা যতদিন বাঁচি ততদিন শিখি। বই হলো বিশ্বের লাইফ লাইন। সারা পৃথিবীকে এক করে যে, তার নাম বই। চিন্তা ভাবনায় পজিটিভিটি আনার জন্যও বইয়ের অবদান অপরিসীম।

পাশাপাশি তিনি বলেন, আজকাল উইপোকা কামড়ালেও তা বড় করে দেখানো হয়। কিন্তু কেউ একটি বই লিখলে বা গান লিখলে তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয় না। কেন পলিটিক্যাল লোকরা কি বই লিখতে পারে না? 

মমতা বলেন, পলিটিক্যাল লোক তখনই পলিটিক্স করতে পারে, যখন সে সামাজিক জীব হিসাবে নিজেকে রক্ষিত করে, সমাজ সংস্কারে মন দেয়।  

তিনি রাজা রামমোহন রায়, নজরুল ইসলাম, স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরদের উদাহরণ তুলে ধরেন।

গত ২৬ জানুয়ারি কলকাতার খিদিরপুরে গ্রন্থাগারের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, এপাং ওপাং ঝপাং, আমরা সবাই ড্যাং ড্যাং- এই যদি কবিতার লাইন হয়, কেউ পড়বে? এই ধরনের বই উইপোকা ছাড়া কারো সুবিধা হয় না।  

তিনি বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন গ্রন্থাগারে এত অখাদ্য বই সরবরাহ করা হচ্ছে, যেগুলো কোনও মনুষ্য সন্তানের পড়ার যোগ্য নয়। একেবারে পরিকল্পিতভাবে কিছু অখাদ্য বই লাইব্রেরিগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে, কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। এর কারণ, এসব বই কিনলে তবেই অনুদান পাওয়া যায়, না হলে পাওয়া যায় না।

এপাং ওপাং ঝপাং- পংক্তিটি মুখ্যমন্ত্রীর লেখা একটি কবিতার। বিচারপতির সমালোচনার পরপরই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য বেশ তাৎপর্য বহন করে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ পর্যন্ত আমার লেখা ১২৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ইংরেজিও রয়েছে। এবারে পাঁচ-ছয়টি বই বের হয়েছে, বাকি চার-পাঁচটা বইয়ের প্রসেসিং চলছে। ‘আমাদের সংবিধান ও কিছু কথা’, ‘দুয়ারে সরকার’, ‘আপনার আমার’, ‘লহ প্রণাম- এর দ্বিতীয় ভাগ।  

তিনি বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামী অনেকের নাম আমরা জানি না। তাদের জীবনী উল্লেখ করা হয়েছে লহ প্রণামে। এছাড়া নারী শক্তির বিষয়ে আমার লেখা বই ‘স্যালুট’।  

মমতা বলেন, বইয়ের সংখ্যা গোনা আমার কাজ নয়। ওটা প্রকাশকদের কাজ। বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে আমার বই বেরিয়েছে।

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন হয়। চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ২০টি দেশের এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রকাশনা সংস্থা মিলিয়ে এবারের বইমেলায় প্রায় ৯০০ স্টল রয়েছে, যা কলকাতার বইমেলার ইতিহাসে এই প্রথম। সর্বসাধারণের জন্য মেলার দ্বার উন্মুক্ত হবে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩
ভিএস/আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।