ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ঢাকা থেকে সুন্দরবন হয়ে কলকাতায় বাংলাদেশি জাহাজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৪
ঢাকা থেকে সুন্দরবন হয়ে কলকাতায় বাংলাদেশি জাহাজ

কলকাতা: ট্রেন, সড়ক, আকাশপথের পর এবার চালু হলো ঢাকা-কলকাতা নৌপথ। বাংলাদেশের এমকে শিপিং লাইনস ও ভারতের কণিষ্ক শিপিং লাইনসের যৌথ উদ্যোগে এ পরিষেবা চালু হলো।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশের জাহাজ কলকাতার আউট্রাম ঘাটের পুলিশ জেটিতে পৌঁছেছে। ১ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় যাত্রীদের নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে এমভি রাজারহাট-সি।

জলপথের এ ভ্রমণে পর্যটকরা যাতায়াত করবেন দুই বাংলার সুন্দরবন ছুঁয়ে। ভিসা ব্যবস্থাতেও থাকছে সুবিধা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই দেশের পর্যটকদের ভিসার ব্যবস্থা করছেন আয়োজকরা। এখন থেকে তিনটি জাহাজ (রাজারহাট-সি) যাতায়াত করবে দুই দেশের মধ্যে।  

জাহাজ মালিক মো. মাসুম খান বলেন, ভারতীয়দের বাংলাদেশের ভিসা এক দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। যে বাংলাদেশিরা জলপথে ভারতে আসবেন, তাদের ক্ষেত্রেও একই সময় লাগবে। ভিসার বিষয়ে ইন্ডিয়ান হাইকমিশন আমাদের আশ্বস্ত করেছে, যার প্রমাণ আমরা এর আগে পেয়েছি। তবে এটি শুধু নৌপথের জন্য।

জাহাজপথে কলকাতা থেকে ঢাকায় যেতে সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই দিন। কলকাতার পুলিশ জেটিতে থেকে হবে ইমিগ্রেশন। সেখানে হবে পাসপোর্ট এবং ভিসা চেকিং। তারপর ছোট বোর্ড চড়ে একেবারে মাঝ গঙ্গায়। সেখানেই নোঙর ফেলে দাঁড়িয়ে থাকবে বিলাসবহুল এ ক্রুজ। বোর্ডিং সম্পন্ন হলে ক্রুজ এগিয়ে চলবে ইন্দো বাংলাদেশ প্রটোকল রোড ধরে।  

অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বজবজ, ডায়মন্ড হারবার, নামখানা, সজনেখালি, হেমনগর হয়ে জলপথে সীমান্ত পার করে জাহাজ প্রবেশ করবে বাংলাদেশে। এরপর আংটিহারা, মোংলা, জি এম চ্যানেল, কাউখালী, ঝালকাঠি, বরিশাল ও চাঁদপুর হয়ে তা ঢাকায় প্রবেশ করবে।

চারতলা এ ক্রুজে রয়েছে মোট ১০০টি কেবিন। আছে ভিআই ও প্রিমিয়াম কেবিন। এ ছাড়া রয়েছে ডাবল বেড কেবিন ও সিঙ্গেল বেড কেবিন। এ ছাড়া রয়েছে ডরমেটরি স্লিপার বেড। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। জাহাজে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে লাইফ জ্যাকেট, লাইফ বেল্ট ও যাত্রী নিরাপত্তার নানা ব্যবস্থা। রয়েছে জিম, লাইভ মিউজিক, ইনডোর গেমেরও ব্যবস্থা। রাখা হয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। বাঙালি কায়দার পাশাপাশি কন্টিনেন্টাল খাবার-দাবারও রাখা হয়েছে বিলাসবহুল এ জাহাজে।

জাহাজে থাকতে পারবেন ৩০০ থেকে ৩৪০ যাত্রী। শ্রেণী অনুযায়ী এক পার্টের মাথাপিছু ভাড়া পড়বে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা, সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে যুক্ত রয়েছে, ট্রাভেল ট্যাক্স, ভিসা প্রসেসিং তিন বেলার খাওয়া দাওয়া। শিডিউল অনুযায়ী, সপ্তাহে একদিন চলবে ঢাকা কলকাতার রুটে।

মাসুম খান জানান, ফেব্রুয়ারির সিডিউল অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে জাহাজ। ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ থেকে কলকাতা। ১৪ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে ঢাকা। ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে কলকাতা। ২৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে ঢাকা।  

তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশের পাশাপাশি আমরা বিদেশি পর্যটকদেরও বেশ সাড়া পাচ্ছি। দ্বিতীয় ট্রিপে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি সুইজারল্যান্ড, আমেরিকার নাগরিকরা জাহাজপথে কলকাতায় এসেছেন।

১৯৭২ সালের পর বেসরকারিভাবে প্রথম এ জাহাজ চালু করল বাংলাদেশের এম কে শিপিং লাইনস। ভারতের অংশে প্রবেশের পর জাহাজের সম্পূর্ণ দায়িত্বে থাকবে ভারতীয় সংস্থা কণিষ্ক শিপিং লাইনস।

জাহাজ চালু হওয়ায় খুশি কলকাতা যাত্রীরা। যারা প্রথম জলপথে বাংলাদেশে যাচ্ছেন, তারা বলছেন, সড়ক-রেল-আকাশ তিনভাবেই তারা বাংলাদেশে গিয়েছেন। এবার তারা জলপথের অভিজ্ঞতা নিতে যাচ্ছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৪
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।