ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিমবঙ্গে আবার সক্রিয় হচ্ছে মাওবাদীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৫
পশ্চিমবঙ্গে আবার সক্রিয় হচ্ছে মাওবাদীরা

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে আগামী কিছুদিনের মধ্যে মাওবাদী নাশকতার আশঙ্কা দেখছেন ভারতের গোয়েন্দা এজেন্সিগুলো। গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর ধারণা পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহল ছাড়াও হামলা হতে পারে রেল পরিবহন, কলকাতার ব্যস্ত স্টেশন হাওড়া এবং শিয়ালদার উপর।



১৭ জুলাই জঙ্গলমহলে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, মাওবাদী নেতা কিষণজিকে হত্যা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

গোয়েন্দাদের কাছে খবর এর পরেই বিশেষ ভাবে সক্রিয় হয়ে পরে মাওবাদীদের একটি দল। গোয়েন্দাদের কাছে আরও খবর, মাওবাদী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের সমসাময়িক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দল নতুনভাবে রাজ্য কমিটি তৈরি করতে চলেছে। আরও বলা হয়েছে, দল তাদের লড়াইকে পশ্চিমবঙ্গে জোরদারভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।

জঙ্গলমহলে যৌথ বাহিনীর অভিযানের ফলে বিগত কয়েক বছর মাওবাদী হামলার ঘটনায় ছেদ পরেছিল। কিন্তু আবার নতুন করে মাওবাদীদের সক্রিয় হবার খবর প্রশাসনের কাছে যথেষ্ট চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে।

১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস, তার আগে এবং পরে প্রশাশনের তরফে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। কলকাতার মেট্রো স্টেশনগুলিতে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।

প্রথম সারির মাওবাদী নেতে কিষণজির মৃত্যু মাওবাদীদের কাছে ছিল বড় ধাক্কা। এর পরেই মাওবাদী দুই প্রথম সারির নেত্রী জাগরী বাস্কে এবং সুচিত্রা মাহাতো সহ বেশ কিছু মাওবাদী নেতা গ্রেপ্তার হন। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম জেলার বিস্তীর্ণ অংশে মাওবাদীদের যে প্রভাব ছিল তা প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হন তেলেগু দীপক। যাকে মাওবাদীদের মিলিটারি সংগঠনের অন্যতম মাথা বলে মনে করা হতো।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের পর যে মাওবাদীরা সক্রিয় হয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় ঐ এলাকা এবং তার আশেপাশের এলাকায় পরপর কিছু মাওবাদী পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায়।

এর পরেই আশঙ্কা অনেকটা জোরদার হয়। আগামী ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচন। রাজনৈতিক ভাবে বিশ্লেষণ করলে সেই সময়ের আগে মাওবাদীদের আবার সক্রিয় হবার সম্ভাবনা প্রবল। বিগত বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গে প্রবলভাবে সক্রিয় হয়েছিল মাওবাদীরা।

কিষণজি নিজে বামফ্রন্ট সরকারকে পরাজিত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু নতুন সরকার নির্বাচনের পাঁচ মাস পরেই যৌথ বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় কিষণজির। এরপর খুব দ্রুত ধরা পড়তে থাকে মাওবাদী প্রথম সারির নেতারা।

অতীতেও দেখা গেছে নতুন রাজ্য কমিটি তৈরি হলে সেই রাজ্য কমিটি কোন ভাবে আঘাত হানার মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশ করে। ইদানীং কালে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশাতে এই ধরনের আঘাত হেনেছে মাওবাদীরা। এর ফলে ভারতের স্বাধীনতা দিবসের আগে বিশেষভাবে সতর্ক থাকছে প্রশাসন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৯ ঘণ্টা,জুলাই ২৫, ২০১৫
ভিএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।