মশালডাঙা (কোচবিহার) থেকে: ৫১টি ছিটমহলের প্রতিটি ঘরে জ্বলে উঠলো ৬৮টি করে মোমবাতি ও একটি করে মশাল। শুক্রবার (৩১ জুলাই) ভারতীয় সময় দিবাগত রাত রাত ১২টায় ২০০০ ফানুস উড়লো ছিটমহলের আকাশে।
মুক্তির আনন্দে ছিটমহলের বাসিন্দারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরলেন। সমস্বরে সবাই বলে উঠলেন ‘বন্দেমাতরম’। ততক্ষণে ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে গোটা ছিটমহল জুড়ে। সেই বৃষ্টির পানির সাথে মিশে গেল চোখের পানি। সবার চোখের আনন্দাশ্রু ভিজিয়ে গোটা ছিটমহলের মাটি। দ্বিতীয় স্বাধীনতার আবেগে উদ্বেলিত সবাই।
এর কিছুক্ষণ আগেই মঞ্চে প্রদর্শিত হয়েছে ছিটমহল আন্দোলন নিয়ে তৈরি প্রামাণ্যচিত্র। একে একে মঞ্চে উঠে নাগরিকরা জানিয়েছেন তাদের লড়াইয়ের কথা, তাদের ফেলে আসা দিনের যন্ত্রণার ইতিহাস।
এরপর শুরু হলো ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। উপস্থিতি প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ বৃষ্টিতে ভিজে গলা মেলালেন ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে। একই সঙ্গে তারা ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করলেন। ভারতের জাতীয় পতাকা থাকলো অর্ধনমিত। এছাড়াও ছিটমহল আন্দোলন চলাকালে যারা মারা গেছেন তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন হলো।
গোটা ভারত যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তখন অন্ধকারের বুক থেকে মশালের আলোয় জেগে উঠলো ভারতের নতুন নাগরিকদের জীবন। জয় হলো ৬৮ বছরের লড়াইয়ের। একশ’ সাতাশ কোটি জনগণের সঙ্গে মিলিত হলেন মশালডাঙা ছিটমহলের বাসিন্দারা।
এরই সঙ্গে জন্ম নিলো আরেক নতুন লড়াই, এই লড়াই উন্নয়নের লড়াই। গোটা ভারতের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লড়াই। ১ আগস্ট সূর্যোদয়ের মুহূর্ত থেকে এই অঞ্চলের মানুষদের এটাই এখন একমাত্র লক্ষ্য দ্বিতীয় স্বাধীনতার মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এই কথাই জানালেন এখানকার অধিবাসীরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৫
ভিএস/এমজেএফ
** গোতামারীতে লাল-সবুজের পতাকা
** উড়লো প্রতীক্ষার পতাকা
** বিজয় উৎসবে কম নন ভারতে যুক্ত হওয়া ছিটবাসীরাও
** আনন্দাশ্রুতে সিক্ত ছিটমহলের মাটি