ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন নেতাজি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৫
গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন নেতাজি

কলকাতা: নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য যখন ভারতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে সেই সময়ে এই আলোচনার সঙ্গে উঠে এসেছে আরও একটি দিক। জানা যাচ্ছে, গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছিলেন নেতাজি।



নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে নানা জনের নানা মত ভারতে প্রচলিত আছে। এর মধ্যে একদল বলেন, বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়। অপর দল বলেন, রাশিয়ায় বন্দি করে রাখা হয়েছিল নেতাজিকে। তবে এই দুই ধারণার বিরুদ্ধে নীরবে ভারত সরকারে বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দুই প্রবীণ। এদের মধ্যে একজন সুরজিত্‍‌ দাশগুপ্ত, অন্যজন বিজয় নাগ।

তাদের দাবি, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ভারতেই কাটিয়েছেন নেতাজি। সুরজিৎ দাসগুপ্ত মিডিয়ার কাছে দাবি করেছেন, তিনি নিজে দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন নেতাজির সঙ্গে। তার সঙ্গে কথা হয়েছিল সাইবেরিয়ার জেলের অভিজ্ঞতা থেকে ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে।

এছাড়াও বাশিয়াতেই কমিউনিজমের একদিন পতন ঘটবে বলে মনে করতেন নেতাজি।

সুরজিৎ দাসগুপ্ত দাবি করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজের পরিচয় লুকিয়ে নানা সময় মুক্তি যোদ্ধাদের নানা রকম পরামর্শ পাঠাতেন নেতাজি।

মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নেতাজির যোগাযোগ সম্পর্কে এর আগেও নানা জল্পনা শোনা গেছে। তবে এতো জোরের সঙ্গে কেউ এই দাবি তোলেননি। এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য হলো-কলকাতায় থাকার সময় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের সঙ্গে পরিচয় হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের।
 
১৯৪০ সালে বঙ্গবন্ধু যখন কলকাতায় তৎকালীন ইসলামিয়া কলেজ, বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজের ছাত্র হিসেবে অবস্থান করছেন, সেই সময় তিনি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের নেতৃত্বে কলকাতার পুরনো ফোর্ট উইলিয়ামের সামনে 'ব্ল্যাক হোল’ মিনারটিকে সরিয়ে ফেলার আন্দোলন করেন।

শুধু এই একটি বিষয় নয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতায় নেতাজি ভবন থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নানা রকম কার্যকলাপ পরিচালিত হতো বলে জানা যায়। যশোর সীমান্তে ভারতীয় সীমায় একটি দোতলা বাড়িতে ‘নেতাজি ফিল্ড হাসপাতাল’ তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে আহত মুক্তি যোদ্ধাদের চিকিৎসা দেওয়া হতো।

আরও জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর জেল থেকে মুক্তির ঠিক ৯ দিন পর ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতা থেকে মোটরগাড়ি চালিয়ে খুলনা হয়ে ঢাকায় হাজির হন নেতাজির ভ্রা‍তুষ্পুত্র ডঃ শিশির কুমার বোস। তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করেন।

যে ব্যক্তির নাম এই প্রসঙ্গে উঠে আসছে তাকে সবাই ভগবান জি বলে সম্বোধন করতেন। এই ভগবান জি ছিলেন স্বয়ং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস, দাবি সুরজিৎ দাসগুপ্তের। তার সঙ্গেই তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিষয় দীর্ঘ আলোচনা করতেন। শুধু এরাই নন, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণানন্দ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী বেনারসি দাস গুপ্তা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন এই ভগবান জী-এর সঙ্গে।

ভগবান জি-এর জিনিস ঘেঁটে জানতে পারা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতা তথা ভারতের সাবেক রেল মন্ত্রী গনি খান চৌধুরী নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন এই ব্যক্তির সঙ্গে। এছাড়াও ভারতের বেশ কিছু প্রথম সারির নেতার চিঠি ভগবান জি-এর জিনিসপত্র থেকে পাওয়া গেছে। যা এখন সমস্তই ভারতের ফৈজাবাদ ট্রেজারিতে রাখা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৫
ভিএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।