ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

অনলাইনে মজেছে কলকাতা, ভিড় নেই পূজার বাজারে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
অনলাইনে মজেছে কলকাতা,  ভিড় নেই পূজার বাজারে

কলকাতা: শারদীয় দুর্গোৎসবের আর মাত্র মাসখানেক বাকি। কিন্তু কলকাতার পূজার বাজারের জন্য বিখ্যাত গড়িয়াহাট, হাতিবাগান, কলেজ স্ট্রিটে এখনো সেরকম ভিড় চোখে পড়ছে না।

বরং এ বাজারগুলো বেশ কিছুটা ফাঁকা।

প্রতি বছর শারদ উৎসবের আগের এই সময়টাতে বাজারগুলোতে যে ভিড় লক্ষ্য করা যায় তার অর্ধেকেরও কম ভিড় এ বছর দেখা যাচ্ছে। অন্য বছরের তুলনায় তাই এখনও জমে ওঠেনি কলকাতার পূজার বাজার।

কলকাতার উইকএন্ডের মুখে শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) গড়িয়াহাট মার্কেটে গিয়ে দেখা গেল, কিছু দোকানে ভিড় থাকলেও বেশিরভাগ দোকানে ক্রেতা সমাগম আগের বছরগুলোর চেয়ে বেশ কিছুটা কম।

প্রতি বছর এই সময়টাতে গড়িয়াহাটের ফুটপাত ধরে চলাফেরা করতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগে পড়তে হয়। এখন আবার কলকাতা পুলিশের নিয়মে ফুটপাত ছাড়া গড়িয়াহাটে চলাফেরা করতে দেওয়া হয় না।

কিন্তু শারদ উৎসবের মাসখানেক আগে ক্রেতা, বিক্রেতা এবং পথচারীদের ভিড় থাকলেও গড়িয়াহাটের ফুটপাতে সহজেই চলাফেরা করা যাচ্ছে। এ পার্থক্যটা চোখে পড়েছে আগত ক্রেতাদেরও। প্রায় বিশ বছর ধরে হাতিবাগান মার্কেটে শারদ উৎসবের কেনাকাটা করা এক গৃহকর্ত্রী জানালেন, গত কুড়ি বছরে এতো ফাঁকায় পূজার কেনাকাটা করার অভিজ্ঞতা তার নেই।

একই হাল কলেজ স্ট্রিটের মার্কেটে। দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এখনও সেভাবে জমেনি পূজার বাজার। অপেক্ষাকৃত ভিড় বেশি শাড়ি ও বাচ্চাদের পোশাকের দোকানগুলোতে। ভিড়ের নিরিখে দেখলে দেখা যাবে পুরুষদের পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড় সবচেয়ে কম, তার পর কম ভিড় নারীদের পোশাকের দোকানে।

অন্য বছরের তুলনায় এখনও কেন জমে ওঠেনি পূজার বাজারগুলো?- এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল কলকাতার অনলাইনে জিনিসপত্র কেনা-বেচা বিষয়ক এক অ্যানালিস্টের কাছ থেকে। তার মতে, গত দুই বছরে কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের বড় অংশের কেনাকাটার চরিত্রে পরিবর্তন এসেছে। এর ফলেই চিরাচরিত বাজারগুলোতে ভিড় কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ।

তিনি জানালেন, ১৬ থেকে ৫৫ বছরের পুরুষ ক্রেতাদের বেশিরভাগই অনলাইনে জিনিস কিনতে পছন্দ করছেন। ঠিক তেমনই ১৬ থেকে ৪৯ বছরের নারীদের কাছেও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে অনলাইনে জিনিসপত্র কেনা।

বিশেষ করে সেই নারীরা যাদের পেশাগত কারণে প্রতিদিন বাইরে বেরোতে হয়, খুব দ্রুত হারে বাড়ছে এ পরিমাণ। বেশি বয়সের মানুষরাও এখন অনলাইনে কেনাকাটা করতে শুরু করেছেন।

ওই অ্যানালিস্ট আরও জানাচ্ছেন, টেকনোলজির ব্যবহারের ফলে অনলাইনে বেশ কিছুটা কম দামে জিনিস দেওয়া সম্ভব, যা কোনোভাবেই সাধারণ দোকানে দেওয়া সম্ভব নয়। শুধু পোশাক নয় অনান্য জিনিস কেনার ক্ষেত্রেও তাই বাড়ছে অনলাইনের চাহিদা।

তিনি আরও জানালেন, অনলাইন কোম্পানিগুলোও নতুন নতুন পরিকল্পনা আনছে। যার ফলে অতি দ্রুতহারে বাড়ছে তাদের বাজার। দোকানদাররা অনলাইনের প্রভাব মানতে না চাইলেও অনেকেই স্বীকার করে নিয়েছেন গত বছর থেকেই ভিড় কম, যা এ বছরে বেশি চোখে পড়ছে। মানুষ বাড়িতে বসে কেনাকাটা করার সুযোগ নিচ্ছেন।

কলকাতার বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরিষ্কার বোঝা গেল, আগামী দিনে মোবাইল বা কম্পিউটারে বসে কেনাকাটাটাই রীতি হতে চলেছে। ক্রেতাদের মূল অংশ তরুণ প্রজন্ম এখন আর ঘুরে ঘুরে না কিনে মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারেই বসে কেনাকাটা পছন্দ করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
ভিএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।