ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

অভিনেতা পীযূষ গাঙ্গুলি আর নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৫
অভিনেতা পীযূষ গাঙ্গুলি আর নেই পীযূষ গাঙ্গুলি (১৯৬৫-২০১৫)

কলকাতা: শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন পশ্চিমবঙ্গের মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেতা পীযুষ গাঙ্গুলি। গতকাল শনিবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে তার মৃত্যু হয়।

সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার পর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিলো ৫০ বছর।

গত ২০ অক্টোবর সন্ধ্যায় কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে গাড়ি চালিয়ে হাওড়ার দিকে ফিরছিলেন পীযূষ। তার সঙ্গে ছিলেন নৃত্যশিল্পী মালবিকা সেন। সাঁতরাগাছি সেতুতে একটি লরির সঙ্গে সংঘর্ষে গাড়িটি দুমড়ে যায়। আহত হন তারা দু’জনই। মালবিকাকে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও গুরুতর আহত পীযূষের অবস্থার উন্নতি হয়নি। চিকিৎসকরা জান‍ান, ভেন্টিলেশনে থাকা সত্ত্বেও তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিলো। রক্তচাপ যথেষ্ট কম ছিলো তার। যকৃৎ-সহ বিভিন্ন অঙ্গ ভালোভাবে কাজ করছিলো না। চিকিৎসকরা জানান, ‘মাল্টি অর্গান ফেইলার’র কারণে মৃত্যু হয়েছে পীযুষের।

দুর্ঘটনায় পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়ের ডান হাত, ডান পা এবং বুকের ডানদিকের পাঁচটি পাঁজর ভেঙে গিয়েছিলো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। মারাত্মক আঘাত ছিলো মুখের দু’পাশে ও কপালে। প্রচুর রক্তপাত হওয়ায় এবং হাড় ভেঙে অস্থিমজ্জা রক্তে মিশে যাওয়ায় সংক্রমণ বাড়ছিলো।

পীযূষ ছিলেন বাংলাদেশের ছেলে। ১৯৬৫ সালের ২ জানুয়ারি ঢাকার নারায়ণগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। থাকতেন কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা এই অভিনেতা ভালো ফুটবলও খেলতেন। তার মৃত্যুতে শোকাহত দুই বাংলার সাংস্কৃতিক অঙ্গন।

প্রায় দু’দশক ধরে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পীযূষ। হেমেন্দ্রকুমার রায়ের ‘আবার যখের ধন’ ধারাবাহিক দিয়ে নিজের অভিনয়-যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর একে একে ‘জন্মভূমি’, ‘সোনার হরিণ’, ‘মেঘের পালক’, ‘আঁচল’-এর মতো ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন।

শুধু ছোট পর্দা নয়, বেশ কিছু চলচ্চিত্রেও দেখা গেছে পীযূষকে। এ তালিকায় অন্যতম ‘বাবা কেন চাকর’, ‘ইতি শ্রীকান্ত’, ‘ম্যাডলি বাঙালি’, ‘ব্যোমকেশ বক্সি’, ‘আবার ব্যোমকেশ’, ‘অটোগ্রাফ’, ‘গয়নার বাক্স’, ‘আবর্ত’। অপর্ণা সেন, সৃজিত মুখার্জি, অঞ্জন দত্ত, ব্রাত্য বসু, কৌশিক গাঙ্গুলির মতো খ্যাতিমান পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। বড় ও ছোট পর্দার পাশাপাশি দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন নাটকের মঞ্চেও। সংগীতের সঙ্গে ছিলো সখ্য। নিজের বেশকিছু নাটক ও ছবিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন তিনি। ২০০৫ সালে ভারতের চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম সম্মান ‘বিএফজেএ’ পুরস্কার পান পীযূষ।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৫
ভি.এস/এইচএ/কেবিএন/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।