কালিম্পং থেকে সিকিমের পথে: ‘একটু ভালো করে বাঁচবো বলে, আর একটু বেশি রোজগার/ছাড়লাম ঘর আমি ছাড়লাম ভালোবাসা, আমার নীল সে পাহাড়/ পারলো না কিছুতেই তোমার কলকাতা আমাকে ভুলিয়ে দিতে/পাহাড়ি রাস্তার ধারের বস্তির আমার কাঞ্চন কে/ কাঞ্চন ঝানা কাঞ্চন ঘর কাঞ্চণ জঙ্ঘা কাঞ্চন মন...
অঞ্জন দত্তের গানটি মনে গেঁথে আছে সেই কত আগে থেকে। এবার মুখোমুখি সেই গানের বাস্তবতায়।
শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পেরোলেই দার্জিলিং আর সিকিমের পথ আলাদা হয়ে গেছে। বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকরা সাধারণত বাঁদিকের পাহাড়ি রাস্তাই ধরেন, কারণ সিকিমে চায়না ও মায়ানমারের মানুষের মতোই বাংলাদেশিদের প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে বিবিআইএন মোটর র্যালির গন্তব্য সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক।
আরও ১৫ কিলোমিটার পথ পেরোলে একটি ব্রিজ। আঁকাবাঁকা তিস্তার পারে পাহাড়ের গাঁ বেয়ে গড়ে উঠেছে জনপদ। দুর্গম পাহাড়ি জীবন এখানে। ব্রিজের উপরেই বানরের দল। বোঝা যায় পর্যটকদের সঙ্গে বেশ পরিচিতি তাদের। তাই ছবি তোলার সময়ও পালিয়ে না গিয়ে বরং ভঙ্গিমা ধরে তারা।
আরও ১৫০ মিটার পেরোলেই রাস্তা দু’পাশে চলে গেছে। ডানের পাহাড়ি পথটাই গেছে কালিম্পং। জীবনমুখী গায়ক অঞ্জন দত্ত কলকাতায় তা পাননি, যা পেয়েছেন কালিম্পংয়ে।
তাইতো গানে গানে বলেছেন, 'সোনার খোঁজে কেউ কত দূর দেশে যায় আমি কলকাতায়/ সোনার স্বপ্ন খুঁজে ফিরি একা একা তোমাদের ধর্মতলায়/ রাত্রি নেমে এলে তিনশো বছরের সিমেন্টের জঙ্গলে/ ফিরে চলে যায় সে পাহাড়ি বস্তির কাঞ্চনের কোলে....’
কলকাতার আলীপুরের অংশগ্রহণকারী সঞ্জয় জানান, এখানকার বেশিরভাগ মানুষই অনেক আগে নেপাল থেকে এসেছেন। পাহাড়ের গাঁয়ে গড়ে উঠেছে এখানকার জনপদ।
পাহাড়ের কাঞ্চনকে উদ্দেশ্য করে অঞ্জন গেয়েছেন, 'জং ধরা রং চটা পার্কের বেঞ্চিটা আমার বিছানা/ কখন যে তুলে নিয়ে গিয়েছিল আমাকে তোমাদের থানা/ তিন মাস জেল খেটে এখন আমি সেই থানার দারোয়ান/ পারবো না ফিরে পেতে হয়তো কোনোদিন আমার সেই কাঞ্চন'।
কোনো এক বন্ধুকে কালিম্পং যাওয়ার আগে অনুরোধ করেন অঞ্জন, 'বেড়াতে যদি তুমি যাও কোনোদিন আমার কালিম্পং/ মেন রেখ শঙ্খর হোটেলের ভাড়া কুড়ি দশেক থেকে কম। '
পাহাড়েই কাঞ্চনের দেখা মিলবে। তাইতো বললেন, রাত্রি নেমে এলে আসবে তোমার ঘরে চুল্লিটা জ্বালিয়ে দিতে/ আর কেউ নয় সে যে আমার ফেলে আসা নীল সে পাহাড়ের মেয়ে। '
তবে বন্ধুর প্রতি অনুরোধ করে অঞ্জন বলেছেন, 'বলো না তাকে আমি দারোয়ান/ শুধু বলো করছি ভালোই রোজগার/ ঐ বস্তির ড্রাইভার চিকমির সাথে যেন বেঁধে না ফেলে সংসার। '
'কাঞ্চন ঝানা কাঞ্চন ঘর কাঞ্চন জঙ্ঘা কাঞ্চন মন- তুমি যাকে বলো সোনা আমি তাকে বলি কাঞ্চন। ' পুরো জার্নি যেন চলতে থাকলো গানের কথা মেলাতে মেলাতে।
কালিম্পংয়ের রাস্তা হয়ে আমাদের গন্তব্য গ্যাংটক। বেশিক্ষণ আর দাঁড়ানো গেলো না। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথে চলতে শুরু করেন রাইডাররা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫
এমএন/এএ
** রাইডারস আর ওয়ে টু গ্যাংটক
** দীর্ঘতম পথ পাড়ি দিয়ে শিলিগুড়িতে রাইডাররা
** হাওটায় সূর্যস্নান
** নেতা হতে আসতে হবে গান্ধী ময়দান
** ছট পূজার মধ্যে গঙ্গা পেরোলো র্যালি
** র্যালি পৌঁছালো পাটনা
** বিহারের পথে ধাবায় চা
** দ্রৌপদী মুরমু’র অাশীর্বাদ নিয়ে রাঁচি ছাড়লো র্যালি
** ওড়িষ্যা-ঝাড়খণ্ডের ঐতিহ্যবাহী ৫ নাচ (ভিডিও)
** ৫৩৪ কিমি পাড়ি দিয়ে র্যালি এখন রাঁচিতে
** মহারাজার পথে পথে সংবর্ধনা
** তাদের জন্য যত ভক্তি
** ভুবনেশ্বর থেকে রাঁচির পথে মোটর র্যালি
** মন্দিরের শহরে...
** ওড়িশায় বিবিআইএন র্যালির উদ্বোধন
** পুরির বাতাসে....
** ১৯ দিনে ৩ দেশে ৪২২৩ কিলোমিটার মোটর র্যালি
** বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল মৈত্রী মোটর র্যালিতে মাজেদুল নয়ন
** আই.আই..আই...চেন্নাই এক্সপ্রেস!
** রামহরি মিস্ত্রী লেনের কথা
** রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্যান্ডউইচ আর ভেলপুরি
** নিউমার্কেটে হ্যাপি দিওয়ালি
** পুরুষ প্রবেশ নিষেধ
** ‘আমি সীমানায় বিশ্বাসী নই’