কলকাতা: প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় দুই বাংলার সংহতি জরুরি বলে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা।
মঙ্গলবার (০৮ নভেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ত্রাণমন্ত্রী মায়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন মন্ত্রীর একান্ত সচিব শাহ কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব রিয়াজ আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহা, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার জকি আহাদ, প্রথম সচিব (প্রেস) মোফাখখারুল ইকবাল এবং কাউন্সিলর ১ এইচ ও সি মাইনুল কবীর।
বৈঠক শেষে প্রেস বিবৃতিতে জাভেদ খান বলেন, বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিপর্যয় মোকাবেলা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা। ভৌগলিক দিক দিয়ে দুই বাংলা কাছাকাছি হওয়ায় এ আলোচনা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে এ বৈঠকের ‘মিউচুয়াল বেনিফিট’ তুলে ধরেন তিনি।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সাংবাদিকদের বলেন, যে কারণে তিনি ভারত সফর করছেন, সেটি সফল হয়েছে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দমকলমন্ত্রী জাভেদ খানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ ঋতুগত ও ভৌগলিকভাবে খুবই কাছাকাছি। ফলে এ বৈঠক ছিল একে অপরের সঙ্গে আলোচনা ও নতুন পদ্ধতি গ্রহণের দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্য উল্লেখ করে তিনি এক্ষেত্রে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়টি তুলে ধরেন।
মায়া জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্যোগ মোকাবেলায় সারা বিশ্বের সমীহ আদায় করে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু গত তিন বছরে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ৬৪ হাজার গ্রামে ঝড়ের কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০। প্রযুক্তির উন্নতির ফলেই মানুষকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে এবং দুর্যোগ মোকাবেলা করা গেছে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে অন্তত পাঁচদিন আগে থেকে ঝড়ের সতর্কবার্তা জারি করে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের ১০৯০ নম্বরের বিনামূল্যের টেলিফোন নম্বরটির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে ফোন করলে যেকোনো সময়ে মানুষ আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি জানতে পারেন।
তিনি আরও জানান, ৫৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক সব সময় তৈরি থাকেন। যেকোনো বিপর্যয় হলেই তারা মানুষকে উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এছাড়া উপকূলবর্তী এলাকায় ৪ হাজার আশ্রয়স্থল নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৫-১৬ সালে ২১টি জেলা পানিবন্দি হওয়ার উপক্রম হতেই সেখানে ২১ লাখ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।
এ ধরনের বিপর্যয় মোকাবেলার তথ্য আদান-প্রদানে ফলে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ- দুই অঞ্চলের মানুষই উপকৃত হবেন বলেও মনে করেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
এ বিষয়ে আগামী দিনে আরও অগ্রগতির আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশের মন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল পশ্চিমবঙ্গের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও হাতে কলমে দুর্যোগ মোকাবেলা ক্ষেত্রের কাজকর্ম দেখার জন্য কলকাতার সল্টলেকে যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৬
ভিএস/এএসআর
** জাভেদ খানের সঙ্গে বৈঠকে মায়া