ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

জামাইষষ্ঠীতে ইরাবতীর ইলিশ আসছে পশ্চিমবঙ্গে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৭
জামাইষষ্ঠীতে ইরাবতীর ইলিশ আসছে পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের ফাইল ফটো

কলকাতা: পদ্মা না ইরাবতী  কোন নদীর ইলিশ এবার পাতে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের জামাইদের! কয়েকদিন বাদেই জামাইষষ্ঠী। পুঁথিপত্রে এই অনুষ্ঠানের মাঙ্গলিক একটি দিক আছে। কিন্তু সমস্ত কিছু ছাড়িয়ে বর্তমানে সামনে চলে এসেছে জমিয়ে খাওয়ায় দাওয়ার অনুষ্ঠান।

বাড়িতে বাড়িতে শাশুড়িরা পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছেন কোন কোন পদে  জামাইদের আপ্যায়ন করবেন। এর মধ্যে চিংড়ি আর ইলিশ আবশ্যিক দুটি পদ।

কিন্তু সমস্যা এখানেই। চিংড়ি বাজারে পাওয়া যাবে বলে বিক্রেতারা অভয় দিচ্ছেন। কিন্তু বড় ইলিশের যোগান নিয়ে নিয়মিত ক্রেতাদেরও নিশ্চিত করতে পারছেন না বিক্রেতারা।

কলকাতার বাজারগুলোতে মাছের পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, জামাই ষষ্ঠীর ইলিশের সঙ্গে এবার এসে জুড়েছে রাজনীতি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। মাছের এক পাইকারি বিক্রেতা যেভাবে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করলেন তাতে জুড়ে গেল তিস্তার জল বণ্টন চুক্তি থেকে বিশ্ব উষ্ণায়ন পর্যন্ত। তার আক্ষেপ তিস্তা চুক্তি হয়ে গেলে এই বছর পশ্চিমবঙ্গের বাজারে যথেষ্ট পদ্মার ইলিশ পাওয়া যেত।

তার কথা অনুযায়ী, গত বছর ইলিশের মৌসুমের শুরুর দিকটা পশ্চিমবঙ্গের কোলাঘাট, দীঘা এবং গঙ্গায় ইলিশ মোটামুটি পাওয়ায় গেলেও শেষের দিকে অনেক ইলিশ ধরা পড়েছিল। কিন্তু এই বছরের যা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে পশ্চিমবঙ্গের ইলিশের উপর ভরসা করে থাকলে জামাইদের পাতে ইলিশ তুলে দেওয়া কষ্টকর হবে।

অতঃপর ভরসা আমদানি করা ইলিশ। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। তিস্তার জল বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন হলে আশা ছিল পদ্মার ইলিশ পাতে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির। কিন্তু সেই আশা এই মৌসুমে অন্তত নেই । তাই একমাত্র আশা ইরাবতীর ইলিশ।
 
পথের দাবি-উপন্যাসের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে আছে তৎকালীন রেঙ্গুন তথা আজকের ইয়াঙ্গুনের ইরাবতী নদীর কথা। সেই ইয়াঙ্গুনের ইরাবতীর ইলিশের ভরসায় রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের শ্বশুর-শাশুড়িরা।

গড়িয়াহাট বাজারে নিয়মিত বাজার করতে আসা অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক উমাকান্ত চক্রবর্তী ইরাবতী আর পদ্মার ইলিশের প্রসঙ্গ শুনে মুচকি হেসে একটি তথ্য প্রকাশ করলেন।
ইরাবতী প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরে, আর বনগাঁ থেকে পদ্মার দূরত্ব কমবেশি আড়াইশ’ কিলোমিটার। কিন্তু আড়াই হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে ইরাবতীর ইলিশের আমদানির দিকেই তাকিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গ।

কিন্তু হাতে নিয়ে কি ইলিশের পার্থক্য বোঝা সম্ভব!

গড়িয়াহাট বাজারে মাছ বিক্রেতা স্বপন মণ্ডল জানালেন, এমন অনেক ইলিশ সমঝদার আছেন যারা হাতে নিয়েই ইলিশের ইতিবৃত্ত বুঝে ফেলেন। কলকাতার বাজারে আর কয়েকদিনের মধ্যেই এসে যাবে ইরাবতীর ইলিশ। পদ্মার সুস্বাদু ইলিশ না পেলেও সেই ইলিশেই সাধ মেটাতে হবে জামাইদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫  ঘণ্টা,  মে ১৪, ২০১৭
ভি.এস/জেডএম
 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।