ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

প্রশংসিত মমতার ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
প্রশংসিত মমতার ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প  ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কলকাতা: ‘কন্যাশ্রী’র পর ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব দরবারে হাজির হতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ কর্মসূচিকে গোটা পৃথিবীর কাছে রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলাই তার লক্ষ্য। বর্তমানে প্রশংসা কুড়িয়েছে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রকল্প’।

‘নবান্ন’ সূত্র বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানিয়েছে। সূত্র বলছে, মমতার ইচ্ছার কথা জানিয়ে দেওয়ার পরপরই তা বাস্তবায়ন করতে উঠে-পড়ে লেগেছেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।


 
কয়েক মাসে আগে ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প দিয়ে বিশ্ব দরবারে পুরস্কার জিতে ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যা দেখে বিদেশিরাও মুগ্ধ। পড়াশোনার প্রতি মেয়েদের আগ্রহ কীভাবে বজায় রাখতে হয়, তা এই কর্মসূচির মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়েছেন মমতা।  

রাজ্যে দুর্ঘটনা কমাতে বছরখানেক আগে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্ঘটনা কমানোর কথা মাথায় রেখেই শুরু হয় এ প্রকল্প।
 
সেই সঙ্গে জাতীয় সড়কেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ পরিসংখ্যান বলছে,  জাতীয় সড়কেই দুর্ঘটনার সংখ্যা বেশি। এরপরই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়।  জরিমানার পাশাপাশি গ্রেফতারের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।  

ট্রাফিক কর্তারাও যাতে ব্যবস্থা নিতে পারেন, সেজন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
 
অর্থ দফতরও এর জন্য মোটা অংকের টাকা অনুমোদন দিয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার কর্মসূচির উপর জোর দেওয়া হয়। এরই মধ্যে এর সুফলও মিলতে শুরু করেছে। দু-তিনটি জেলা বাদ দিলে অন্যান্য জায়গায় দুর্ঘটনার সংখ্যা একধাক্কায় অনেকটা নিচে নেমে এসেছে।  

পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই প্রকল্প চালু হওয়ার পর দুর্ঘটনা কমেছে অনেকটাই। এছাড়া আগামীদিনে দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে রাজ্য। ইতোমধ্যে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে দুর্ঘটনার সংখ্যাও যথেষ্ট কমেছে।
 
শুধু তাই নয়, নিমেষেই যাতে যে কোনো দুর্ঘটনার খবর শীর্ষ কর্তাদের কাছে পৌঁছে যায়, সেজন্য চালু করা হচ্ছে বিশেষ ট্রাফিক অ্যাপস।

কঠোরভাবে দেখা হচ্ছে চালকদের কাগজপত্র।  ছবি: বাংলানিউজসে ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলের ছবি থেকে শুরু করে যাবতীয় তথ্য চলে যাবে সেকেন্ডের মধ্যেই। একই সঙ্গে পুরানো দুর্ঘটনার তথ্য ও ছবিও যাতে চটজলদি মেলে, সে ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
 
এক নজরে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প:
 
কলকাতাসহ গোটা রাজ্যে যানচলাচলে মূল রাস্তায় বেশি করে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেগুলো থেকে নির্দিষ্ট জায়গায় বসে যান চলাচললের উপর নজরদারি করা হচ্ছে।  
 
রাস্তায় বসানো হয়েছে আরও বেশি করে ট্রাফিক সিগন্যাল। সিগন্যাল ভাঙলে অপর সিগন্যালে যাতে চালককে ধরা যায় তার জন্য সিসি ক্যামেরার দ্বারা ডিজিটাল মানটরিংও করা হচ্ছে।  
 
এছাড়া ট্রাফিক সার্জেন্টকে বেশ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। উচু মহলের পরিচয় দিয়ে চালক যাতে পার না পায় তাও তদারকি করা হবে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে স্পিড মিটার বসানো হয়েছে। কোন রাস্তায় কত স্পিডে গাড়ি চলবে তা ডিজিটাল ইন্ডিকেটরে দেখা যাবে।  

তার বেশি স্পিড উঠলে সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার রুপি জরিমানার আইন আনা হয়েছে। এছাড়া সিট বেল্ট না থাকলে দশ হাজার রুপি জরিমানা। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে পঁচিশ হাজার রুপি জরিমানার আইন আনা হয়েছে।
 
নতুন ট্রাফিক আইনে বলা হয়েছে, বিনা হেলমেট ও বিনা কাগজে গাড়ি বের করলে জরিমানা করা হবে। বিনা হেলমেটে পেট্রোলপাম্প থেকে তেল দিতে মানা করা হয়েছে।  

এছাড়া আরও কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণে। শুধু চালক-ই নয়, পথচারীদের জন্যও আইন কঠোর করা হয়েছে।  

এরমধ্যে উল্ল্যেযোগ্য হচ্ছে- শহরের রাজপথে নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া রাস্তা পারাপার না করলে ও কানে ফোন নিয়ে রাস্তা পারাপার হলে মোটা অংকের জরিমানার বিধান।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
ভিএস/এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।