ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

এনআরসি ইস্যুতে আসামে তৃণমূল প্রতিনিধিদের হেনস্থা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০১৮
এনআরসি ইস্যুতে আসামে তৃণমূল প্রতিনিধিদের হেনস্থা শিলচর বিমানবন্দরে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিনিধিদল। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী ভারতের আসাম রাজ্যের ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি অব সিটিজেন্সের (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া থেকে বাদ পড়েছে ৪০ লাখ বাসিন্দার নাম। নাগরিকত্ব বাদ নিয়ে ফের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

দিল্লির সংসদ ভবনে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বসে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লাকিলি (সৌভাগ্যবশত) আমি বাংলাদেশ থেকে আসিনি। আমার কাছে নাগরিকত্বের সব প্রমাণ আছে।

না হলে তো ওরা (বিরোধীপক্ষ) আমাকেও অনুপ্রবেশকারী বলত। ’ 

এনআরসি ইস্যুতে তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের নামে বদনাম করছে বিজেপি। বাংলাদেশ কী জঙ্গি দেশ নাকি? দেশভাগের পর প্রচুর লোক পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। পাকিস্তান থেকে পাঞ্জাবে, গুজরাটে, দিল্লিতে, রাজস্থানে এসেছেন। বাংলাদেশ থেকে এসেছেন পশ্চিমবাংলা, ত্রিপুরা ও আসামে। কিন্তু এখন তারা তো এ দেশের নাগরিক। শুধু আসাম নিয়েই কেন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে?’

মমতা বলেন, ‘আমার মা-বাবার ক্ষেত্রে তো কোনো প্রমাণ ছিল না৷ ওঁদের বার্থ সার্টিফিকেট ছিল না৷ তখনকার দিনে তো সেসব কারও কাছে থাকত না৷ তবে আমি ভাগ্যবান যে আমার কাছে সব প্রমাণ আছে৷ আমি বিজেপির চাকর নই৷ ওরা যা খুশি বলবে, তার জবাব দিতে হবে নাকি? আসামে অনুপ্রবেশকারী থাকতে পারে৷ তবে সেটা খুব বেশি হলে এক শতাংশ৷ তার জন্য ৪০ লাখ মানুষ হতে পারে না। ’ 

মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, সীমান্ত তো সামলায় বিএসএফ। যারা কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় পরে। অনুপ্রবেশ হলে তার দায় তো কেন্দ্রীয় সরকারের৷ অনুপ্রবেশকারীর কথা বলে ভারতীয় নাগরিকদেরই বাদ দিচ্ছে এরা। আসলে বিজেপিকে যারা ভোট দেন না, তাদেরই নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে৷

এদিকে মমতার পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) তৃণমূলের একদল সংসদ সদস্য-বিধায়ক আসামে পৌঁছেছেন। তবে সেখানে এখন ১৪৪ ধারা চলছে। আসামে পৌঁছানোর পরই শিলচর বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হয় তৃণমূল প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, তৃণমূলের প্রতিনিধিদল ১৪৪ ধারা ভেঙে আসামে প্রবেশ করতে চান৷ শিলচর বিমানবন্দরে তাদের ফেরত পাঠাতে গেলে সমস্যার সৃষ্টি হয়।  

এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানালেন দলের মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন৷ তিনি বলেন, ‘দেশে সুপার ইমার্জেন্সি চলছে৷ সংসদ সদস্য সুখেন্দ শেখর রায়ের বুকে পেসমেকার বসানো আছে৷ তাকে ধাক্কা মেরেছে পুলিশ৷ বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়৷’

‘আমাদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ায় আসাম পুলিশ৷ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি৷ আমাদের প্রতিনিধিরা দুজন করে যেতে চেয়েছিল৷ কিন্তু তাতেও রাজি হয়নি পুলিশ। ’ 

ডেরেক ও ব্রায়ান জানান, তৃণমূল প্রতিনিধিরা বিমানবন্দরে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন। তবে আসাম পুলিশ চায় তৃণমূল প্রতিনিধিদল যাতে আসামে প্রবেশ না করতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৮
ভিএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।