ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

তিন ‘ম’তেই ভারতের ভাবী প্রধানমন্ত্রী!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৮
তিন ‘ম’তেই ভারতের ভাবী প্রধানমন্ত্রী! মমতা, মায়াবতী ও নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: ভারতে লোকসভা ভোট অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচন হতে এখনও কিছুটা সময় আছে। কিন্তু এরই মধ্যে বিজেপি নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিপক্ষে বিরোধীরা কাকে সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, তা নিয়ে ইতোমধ্যে দেশজুড়ে জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। 

বর্তমানে বারবার বিরোধী জোটের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নাম উঠে আসছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম।  

কিন্তু প্রশ্ন হল, তৃণমূল সুপ্রিমো কী সব বিরোধীদলের সমর্থন পাবেন? এরই মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী তথা জনতা দলের নেতা এইচডি দেবেগৌড়ার সমর্থন কিন্তু পেয়েছেন তিনি।

স্পষ্টভাবেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে তুলে ধরা হলে, আমি স্বাগত জানাবো। ’
 
২০১৯ সালে জাতীয় নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকাতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একার জোরে বিজেপিকে হারানো সম্ভব নয়, বুঝেই ফেডারেল ফ্রন্ট বা তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনে জোর দিয়েছেন মমতা।  

সেই ফ্রন্টে তিনি শামিল করছেন কংগ্রেস বাদে বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক বিভিন্ন দলকে। যার যেখানে জোর, সেখানে একের বিরুদ্ধে এক নীতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে চাইছেন মমতা।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কৌশল যে বিজেপির পক্ষে বিপদের হতে পারে, তা সাম্প্রতিক একাধিক উপ-নির্বাচনেও স্পষ্ট হয়েছে।  
 
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০১৪ এর লোকসভা নির্বাচনে আসনের নিরিখে ভারতের বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশ থেকে বড় ব্যবধানে জিতেছিল বিজেপি। সেবার ছিল তীব্র মোদী হাওয়া।  

পরবর্তীতেও হাওয়া এতটাই প্রবল ছিল যে সেখানকার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির নতুন মুখ আদিত্যনাথ যোগী মুখ্যমন্ত্রী হন।  

এবার কিন্তু সেই ঝড়ের প্রভাব অনেকটাই কমেছে উত্তরপ্রদেশসহ ভারতজুড়ে। তার ওপর উত্তরপ্রদেশে বিজেপির দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী এখন ভোট কাটাকুটির রাস্তা থেকে সরে আসতে চাইছে।  

‘বুয়া’ মায়াবতীর সঙ্গে ভাতিজা অখিলেশ অর্থাৎ সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি হাত মেলানোর ফলে উত্তরপ্রদেশে একের পর এক উপ-নির্বাচনে পরপর প্রেস্টিজ ফাইটে হেরেছে বিজেপি।  

বস্তুত, এই বিরোধী ঐক্যের জন্যই এখন উঠেপড়ে লেগে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবসময় কি ছেলেরাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ শাসন করবেন? 

প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৭ বছর ধরে দেশ শাসন করেছিলেন। তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না কেন? মমতা শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, প্রয়োজনে দিল্লিতেও যাচ্ছেন ঘন ঘন।  

কথা বলেছেন, একাধিক বিরোধী নেতার সঙ্গে। বিজেপি বিরোধী হাওয়াকে জোরদার করছেন মমতা। প্রাণপণ পরিশ্রম করছেন বিরোধী দলগুলোকে এক ছাতার তলায় আনতে।  

ফলে বিরোধী শিবিরের এখন মমতাকে প্রধানমন্ত্রী পদে সমর্থন করতে আপত্তি নেই। মমতার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েই এ কথা বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়া।  

তবে প্রধানমন্ত্রী পদে মমতার সঙ্গে সঙ্গে মায়াবতীর নামও শোনা যাচ্ছে। ফলে ভারতের অভিজ্ঞ রাজনৈতিক মহল এখন থেকেই ধরে নিয়েছেন তিন ‘ম’ অর্থাৎ মোদী-মমতা-মায়াবতীর মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে ভারতের ২০১৯ এর নির্বাচনে ভাবী প্রধানমন্ত্রীর নাম।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৮
ভিএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।