ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

প্রিয়াঙ্কা জাদুতে আসন কি বাড়বে?

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৯
প্রিয়াঙ্কা জাদুতে আসন কি বাড়বে? নির্বাচনী প্রচারণায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে শেষ ও সপ্তম দফার ভোট ১৯মে। উত্তরপ্রদেশের ১৩ আসনসহ আটটি রাজ্যের ৫৯টি আসনে ভোট হবে ওইদিন। তবে বাড়তি নজর অবশ্যই থাকবে উত্তরপ্রদেশে। 

কারণ রাজ্যটি ভারতের বৃহত্তম লোকসভা কেন্দ্র। ৮০টি আসন ও বেশির ভাগ প্রার্থী ভিভিআইপি।

 

গত একমাস ধরে এই রাজ্য চষে বেড়িয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। জনসভা, রোড শো, গাড়ির ছাদে বসে হাত নাড়া, আশপাশে কর্মী সমর্থকের আবদারে সেলফি, জনসংযোগ বাড়াতে কি-ই না করেছেন প্রিয়াঙ্কা! 

এমনকি তার মনভোলানো হাসি, সোজাসাপ্টা কথাবার্তা, রাজনীতির চেনা ছকের বাইরে তরতাজা মুখ এবং পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশার যোগফলের নাম প্রিয়াঙ্কা৷ যার অনভিজ্ঞ কাঁধে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব চাপিয়ে দাদা রাহুল গান্ধী নিশ্চিন্তে প্রচার চালিয়েছেন সারা দেশে।  

দাদার কেন্দ্র আমেঠি, মায়ের কেন্দ্র রায়বেরিলি সামলে উত্তরপ্রদেশে দলকে কার্যত একাই কাঁধে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা। রাজনৈতিক দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে উত্তরপ্রদেশ আইসিইউ-তে চলে যাওয়া দলকে চাগিয়ে তোলা এত সহজ নয়।  

উত্তরপ্রদেশে ছয় দফার ভোট হয়ে গেছে। সপ্তম পর্বের ভোট ১৯মে। অর্থাৎ দীর্ঘ ভোটপর্ব একেবারে শেষের দিকে চলে আসার পর দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কতটা প্রভাব ফেলতে পারলেন প্রিয়াঙ্কা?

উত্তরপ্রদেশের ধুলো মাখা পথে তিনি কম ঘোরেননি। কোনো সন্দেহ নেই, উত্তরপ্রদেশে প্রিয়াঙ্কা সম্পর্কে কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করলে ইতিবাচক জবাব মিলবে।  

এমনকি কট্টর বিজেপি সমর্থকও মানবেন, প্রিয়াঙ্কা আসায় কংগ্রেসের কিছুটা লাভ হয়েছে। ভোটের হারও বাড়বে৷ যারা হতাশ হয়ে কংগ্রেসের প্রতীক ছেড়ে দিয়েছিলেন, তারা আবার হাত-কে ধরতে পারেন৷ 

লখনৌ-এর হজরতগঞ্জের যুবক বীরেন্দ্র রানা ব্যবসার কাজে কলকাতায় এসেছিলেন। নিজে কংগ্রেসকে ভোট না দিলেও তার মতে, প্রিয়াঙ্কার প্রবেশের ফল ইতিবাচক হবে কংগ্রেসের জন্য। তাকে দেখার জন্য ভিড় হচ্ছে৷ এটা কম কথা নয়৷ 

বীরেন্দ্রের সঙ্গে আসা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ঘরের ভোটার গোরক্ষপুরের ব্যবসায়ী রাজেশ গুপ্ত জানান, তিনি কংগ্রেসের ভোটার নন৷ তাই এবারও হাতে ভোট দেবেন না৷ কিন্তু প্রিয়াঙ্কার কথাবার্তা তার ভালো লেগেছে৷ 

তারও ধারণা, ‘প্রিয়াঙ্কা আসায় কংগ্রেসের ভোট বাড়বে৷’ একই মত আজমগড়ের প্রভুদয়াল সিং, বারাণসীর রামেশ্বর রাইয়েরও৷ ভোট হয়তো কংগ্রেসকে দেবে না কিন্তু ইন্দিরামুখী প্রিয়াঙ্কাকে মনে ধরেছে।

এদিকে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর বিরুদ্ধে খারাপ শব্দ ব্যবহারের অভিযোগ এনে দল ছাড়লেন উত্তরপ্রদেশের ভাদোহির অঞ্চলের কংগ্রেস সভানেত্রী নীলম মিশ্রসহ ১০০ বেশি কর্মী।  

নীলমের অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে ভাদোহি কেন্দ্রে এক বহিরাগতকে টিকিট দিয়েছে কংগ্রেস। এই নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তুমুল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।  

এ প্রসঙ্গে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি অপমানকর শব্দ ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ করেন নীলম।  

এ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোটের মুখে নেত্রীর দল ছেড়ে যাওয়ায় কংগ্রেস সমস্যায় পড়তে পারে। তবে কংগ্রেসের দাবি, অনেক দেরি করে প্রিয়াঙ্কাকে প্রচারে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই ছোটখাটো বিষয় এখন সামাল দিতে অভ্যস্ত নন তিনি।  

তবে এ নিয়ে দলের মধ্যে আছে দুঃশ্চিন্তা। কারণ প্রিয়াঙ্কার জনপ্রিয়তা বাড়লেও ভোটের বাক্সে কতটা ফলপ্রসু হবে তা নিয়ে তারাও রয়েছেন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৯
ভিএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।