আগরতলা (ত্রিপুরা): প্রাকৃতিক রাবার উৎপাদনে ভারতের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রান্তিক রাজ্য ত্রিপুরা। ত্রিপুরা রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই এখন রাবার বাগান রয়েছে।
রাজ্যের দক্ষিণ জেলার আয়তন ১৫১৪ দশমিক ৩২২ বর্গ কিলোমিটার এবং এই জেলায় সব মিলিয়ে ১৫,৮১০ জায়গাতে রাবার বাগান রয়েছে। বর্তমানে ১৩,০৮৯ হেক্টর জায়গার গাছ থেকে রাবার উৎপাদিত হচ্ছে। এই জেলার জনসংখ্যা প্রায় ৪,৩০,৪৯৯ জন। এর প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে রাবার চাষের সঙ্গে জড়িত।
এই সকল রাবার চাষীদেরকে ভারত সরকারের রাবার বোর্ড রাবার চাষ সংক্রান্ত বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো রাবার চারা উৎপাদন থেকে শুরু করে উন্নত মানের রাবার সীট তৈরি পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা। রাবার নার্সারী তৈরী, বাগান লাগানো, টেপিং, উন্নতমানের সীট তৈরি ইত্যাদি বিষয়ে চাষীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা। বাগান লাগানো, রোলিং মেশিন ক্রয়, ধোঁয়াঘর তৈরি ইত্যাদির জন্য যোগ্য চাষীদেরকে সাবসিডি প্রদান করা। নতুন নতুন রাবার উৎপাদক সমিতি তৈরি করা যাতে উপরোক্ত কাজগুলি সমস্ত চাষীদের স্বার্থে সমর্পণ করা যায়।
রাবার গাছ থেকে ল্যাটেক্স সংগ্রহ করার পর এগুলোকে এসিড মেশানো পানিতে কিছুক্ষণ রাখা হয়। তারপর ল্যাটেক্স থেকে রাবার এবং পানি আলাদা হয়ে যায়। এরপর রুলিং মেশিনের সাহায্যে এই রাবারগুলি সীটের আকার দেওয়া হয়। এরপর সীটগুলোকে শুকানো হয়, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ কারণ শুকানোর উপর রাবারের গুণগত মান নির্ভর করে। এই কাজের একটা অংশ হচ্ছে ধোঁয়ার সাহায্যে সীটগুলিকে শেষ পর্যায়ে শুকানো। এই কাজে যাতে চাষিরা আরো দক্ষ হয় এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নির্মিত ঘরের মধ্যে রাবার সীটগুলোকে শুকাতে পারে তার জন্য রাবার বোর্ড উন্নত মানের স্মোক হাউস তৈরি করে দিয়ে থাকে।
দক্ষিণ জেলায় বর্তমানে প্রায় ২০টি উন্নত মানের স্মোক হাউজ রয়েছে। আগামী দিনে স্মোক হাউজের সংখ্যা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দক্ষিণ জেলায় নতুন আরো ২,৭২১ হেক্টর জায়গার গাছ থেকে রাবার উৎপাদন শুরু হবে। রাবার বোর্ডের দক্ষিণ জেলা অফিস থেকে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১
এসসিএন/এমকেআর