ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ত্রিপুরার সেরা ড্রাগন ফল চাষির স্বীকৃতি পেলেন রূপক

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২১
ত্রিপুরার সেরা ড্রাগন ফল চাষির স্বীকৃতি পেলেন রূপক রূপকের ড্রাগন ফল বাগান। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): বিদেশের বেসরকারি সংস্থার চাকরি ছেড়ে নিজ বাড়িতে এসে এখন ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেন রূপক চৌধুরী। ত্রিপুরা সরকার তাকে রাজ্যর সফল এবং সেরা ড্রাগন ফল চাষির স্বীকৃতি দিয়েছে।

দক্ষিণ জেলার অন্তর্গত বিলোনীয়ার বাসিন্দা রূপক আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে গিয়ে ছিলেন। সেখানে থাকাকালীন সময়ে প্রথম ড্রাগন ফল খান। ফলটির দারুণ স্বাদের জন্য ড্রাগন ফল চাষের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয় তার। তিনি বাড়ি আসার পর অনেক খুঁজেও কোথাও এই ফলের চারা পাননি। পরে জানতে পারেন যে বাংলাদেশে এই ফলের চাষ হয়।

২০১৩ সালে বাংলাদেশে দুই দিন থেকে ড্রাগন ফলের চাষাবাদ সম্পর্কে ধারণা নেন। ফেরার সময় তিনি কিছু কাটিং নিয়ে আসেন। এরপর বাড়িতেই এই ফলের চাষ শুরু করেন। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন ড্রাগন ফল। এক সঙ্গে ২১৫টি পিলারে গাছ লাগান এবং ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে প্রায় ৪০০ কেজি ফল বিক্রি করেন এবং ২০১৯ সালে প্রায় ৮০০ কেজি ফল বিক্রি করেন। পাইকারি দরে প্রতি কেজি ৩০০ রুপি করে বিক্রি করছেন।

বর্তমানে দুটি প্লটে প্রায় ৮০০টি পিলারে ড্রাগন গাছ রয়েছে। প্রথম প্লট দেড় বিঘা জমিতে এবং দ্বিতীয় বাগানটি এক একর জায়গা জুড়ে। গত বছর প্রায় ৯০০ কেজির বেশি ফল ধরেছে। এর মধ্যে ৮০০ কেজি বিক্রি করেছেন এবং বাকি ফলগুলি স্বজনদের দিয়েছেন। এ বছর এখনো ফল আসেনি। প্রথম বছর এক একটি পিলারে প্রায় এক হাজার রুপির বেশি খরচ হয়েছে। এখন সারা বছরে ৪০ থেকে ৫০ হাজার রুপি খরচ হয় বাগান পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। এরপরও প্রতি বছর নূন্যতম দুই লাখ রুপি লাভ থাকে সব খরচ বাদ দিয়ে।

তিনি জানান রাজ্য সরকারও এখন ড্রাগন ফল চাষে খুব গুরুত্ব দিয়েছে। নতুন চাষিরা যাতে এই ফল চাষে উৎসাহিত হয় তার জন্য বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করছে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার তাকে সেরা ড্রাগন চাষি হিসেবে সম্মাননা দিয়েছে এবং ২০ হাজার রুপির চেক দিয়েছে। বাগান শুরু করার সময় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর থেকে ২০ হাজার রুপি অর্থিক সহায়তা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।  এই ড্রাগন ফল ছাড়াও তিনি নতুন করে মুসাম্বী, কমলা, লেবু ইত্যাদি মিশ্র ফলের বাগান শুরু করছেন।

ত্রিপুরা সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অন্তর্গত উদ্যান এবং ভূমি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে রাজ্যে চার দশমিক ছয় হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান রয়েছে। এর পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। রাজ্যে ১০ জন চাষি বড় আকারের বাগান করেছেন। সারা ভারতেও এর চাষ বাড়ছে। বর্তমানে সারা দেশে ৪০০ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান রয়েছে। এই ফল চাষ শুরুতে তুলনামূলক ভাবে খরচ বেশি। প্রতি হেক্টরে প্রায় খরচ হয় ১১ লাখ রুপি। তবে একটি গাছ থেকে প্রায় ৩০ বছর ফল পাওয়া যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২১
এসসিএন/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।