কলকাত: পশ্চিমবঙ্গে ২৯৪টি আসনের আটদফা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট অনুষ্ঠিত হবে রোববার (২৭ মার্চ)। ভোট হবে আদিবাসী অধ্যুষিত জেলার মোট ৩০টি আসনে।
প্রচারে ব্যস্ত তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তিনটি নির্বাচনী সভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। এই জেলা এতদিন ‘অধিকারী’ গড় বলে পরিচিত। তৃণমূলে থাকাকালীন এই জেলার ভোট প্রচারের দায়িত্বে থাকতেন শুভেন্দু অধিকারী ও তার ভাইয়েরা এবং বাবা শিশির অধিকারী। তবে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সেখানকার রাজনৈতিক বিন্যাসে বদল ঘটেছে। আবার নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে এই জেলা যে তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি তা প্রমাণে মরিয়া তৃণমূল সুপ্রিমো। পাশাপাশি ময়না, পাঁশকুড়া, চণ্ডীপুরে সভা করলেন যুব তৃণমূল সভাপতি তথা মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফলে প্রচার ঘিরে আপাতত জমজমাট ভোটের পশ্চিমবঙ্গ। তবে প্রথম দফায় যে ৩০টি আসনে ভোট সেখানে লোকসভার নিরিখে বেশিরভাগটাতেই পিছিয়ে তৃণমূল। একুশের নির্বাচনে হারানো ভোট পুনরুদ্ধারই যেমন লক্ষ্য মমতার, তেমন জয়ের ধারা ধরে রাখাই এখন চ্যালেঞ্জ মোদী, অমিত শাহের।
এদিন অমিত শাহ বলেন, দিদি (মমতা) পরিবর্তনের ডাক দিয়ে ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান করেছিলো। কিন্তু আদতে কোনো পরিবর্তন হয়নি। কমিউনিস্ট হোক বা তৃণমূল কংগ্রেস হোক, কেউই অনুপ্রবেশ সমস্যার সমাধান করেনি। আমরা বলছি আগামী ৫ বছরের মধ্যে অনুপ্রবেশমুক্ত পশ্চিমবঙ্গ গড়বো। বাংলায় দুর্গাপূজা এবং সরস্বতী পূজা হবে কি-না তার জন্য আদালতে যেতে হয়। বিজেপি ক্ষমতায় এলে দুর্গাপূজা এবং সরস্বতী পূজা আটকাবে না। রাজ্যে বেকার বাড়ছে। মমতা দিদি একজন ভাইপোর (অভিষেক) জন্য গোটা বাংলার ভাইপোদের বঞ্চিত করেছে। পিসি (মমতা) চান যে ভাইপোই মুখ্যমন্ত্রী হোক। আর মোদীজি চান যে সোনার বাংলা গড়ে ওঠুক। পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা বাংলাকে সোনার বাংলা তৈরি করবো।
এদিনই অমিত শাহের সভামঞ্চ থেকে বিজেপিতে যোগ দেন মেদিনীপুর জেলার কাঁথির তৃণমূল সাংসদ তথা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী।
আমি আসলে একটা গাধা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
অপরদিকে শুভেন্দুর নাম না নিয়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভা থেকে বলেন, একসময় খুব ভালোবাসতাম। কী করিনি ওর জন্য। ২০১৪ সাল থেকে নাকি বিজেপির সঙ্গে যোগ ছিল। মানে নিজের ঘরেই সিঁধ কেটেছে। এর থেকে বড় গাদ্দার আর কেউ হয় না। এদের মেদিনীপুর থেকে তাড়াতে হবে। আমি আসলে একটা গাধা। তাই এসব বুঝতে পারিনি। ওরা (অধিকারী পরিবার) সব করে খেলেও আমি বুঝতে পারিনি। বিজেপি এখন হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। সেই টাকা থেকে গুণ্ডা পোষে। আমার কাছে খবর আছে এখানে অনেক টাকা ছড়াচ্ছে। টাকা নিয়ে ভোট দেবেন না। বিজেপি একটা ডাকাত পার্টি, আর আমাদের কিছু গাদ্দাররা সেখানে জুটেছে। এসব গাদ্দার মির জাফরদের ভোট দেবেন না।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগে সোনার ভারত গড়ে দেখাক ওরা। পরে সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দেবে। কেন গুজরাট সোনার গুজরাট হলো না। কেন রাজস্থান সোনার রাজস্থান হলো না। যেই রাজ্যে তারা ক্ষমাতায় আছে কেন সেগুলো সোনার হলো না। আর এখানেই এসেই সোনার বাংলা গড়বে। মিথ্যে ভাঁওতা দিচ্ছে ওরা। ওদের চক্রান্তে পা দেবেন না।
অপরদিকে সাড়ে তিনটে নাগাদ রাজ্যে এসে পৌঁছেছন প্রধানামন্ত্রী। তিনি কি বার্তা দেন সেদিকেই নজর এখন সবার।
তবে শনিবার (২০ মার্চ) প্রচারে এসে মমতার সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মমতাকে ‘নির্মমতার পাঠাশালা’ বলে বিঁধেছিলেন তিনি।
এদিন বিকেলেই নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করবে বিজেপি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২১
ভিএস/এইচএডি