আগরতলা (ত্রিপুরা): ২০১২ সালে অন্যদিনের মতো জঙ্গলে গাছ লাগানোর কাজ করছিলেন যাদব পায়েঙ্গ। হঠাৎ দেখেন একজন লোক তার বাগানে ঘোরাফেরা করছে।
এতদিনে তার লাগানো গাছগুলি বড় হয়ে গভীর অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পশু-পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। প্রাণীগুলির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত একশৃঙ্গ গণ্ডার। রাতের আঁধারে চোরাশিকারির দল নৌকায় করে তার তৈরি জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে গণ্ডারসহ অন্য প্রাণী শিকার করতো তার অনুপস্থিতিতে।
ওই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে দেখে তার ধারণা হয় যে তিনি চোরাশিকারি। পরে ওই ব্যক্তি তাকে বারবার আশ্বস্ত করে বলেন যে তিনি চোরাশিকারি নন। তিনি ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার। ঘুরতে ঘুরতে নদীর মধ্যে বিশাল জঙ্গল থেকে এখানটায় এসেছেন পশুপাখি আছে কিনা তা দেখার জন্য। এরপর তিনি তার ছবি তুলে আনেন এবং তা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এরপর বিশ্ববাসী তার নাম জানতে পারে। ওই আলোকচিত্রীর নাম জিতু কলিতা। এরপর তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব এতোটাই হয়ে যায় যে এখন অসামের বাইরে যাদব পায়েঙ্গ যেখানেই যান তার সঙ্গে বন্ধু জিতু কলিতাকেও যেতে হয়।
এ বিষয়ে বাংলানিউজের তরফের চিত্রসাংবাদিক জিতু কলিতার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান, ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার হিসেবে তিনি প্রায়ই এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ান। তাই তিনি মাঝে মধ্যে নৌকা ভাড়া করে ব্রহ্মপুত্রের বুকে ঘুরে জেগে উঠা চরগুলিতে ঘুরে বেড়ান পাখিসহ অন্য প্রাণী খুঁজতে।
২০১২ সালে একদিন ঘুরতে ঘুরতে মাজুলির পাশে ব্রহ্মপুত্রের বুকে ধুঁ ধুঁ বালুর মধ্যে ঘন সবুজ জঙ্গল দেখতে পান। বাকি চরগুলি বালিময় থাকলেও একটি চর গাছপালায় ভর্তি দেখে ছুটে যান ও এদিক-ওদিক ঘুরতে থাকেন ছবি তোলার জন্য। তখন হঠাৎ করেই যাদবের সঙ্গে তার দেখা হয় এবং যাদব তাকে চোরাশিকারি ভেবে এই জায়গা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলেন।
এরপর জিতু তাকে বোঝাতে সক্ষম হন এবং এখন তাদের মধ্যেকার বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়। যাদব পায়েঙ্গকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য জিতু কলিতার ভূমিকা অপরিহার্য।
আরও পড়ুন...
** ভারতের বন-মানব (১): ৪৩ বছরে একাই বালুতটকে বানিয়েছেন ঘন জঙ্গল
** যুক্তরাষ্ট্রে গাছ লাগানো শেখাবেন ভারতের ‘ফরেস্ট ম্যান’
[তিন পর্বের ধারাবাহিকের শেষ পর্ব]
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২১
এসসিএন/এএ