আগরতলা, (ত্রিপুরা): তরমুজ নাম বললেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে টকটকে লাল শাসযুক্ত ফলের চেহারা। একইসঙ্গে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহের ছায়া।
তরমুজ মানেই ভেতরটা লাল হতে হবে আমাদের এই ধারণাকে এবার বদলাতে কাজ করছে ত্রিপুরা সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অন্তর্গত উদ্যান এবং ভূমি সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
ওই উদ্যান এবং ফল গবেষণাকেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো হলুদ রঙের তরমুজ চাষ শুরু করেছে।
এই গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ড. রাজীব ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, হলুদ রঙের তরমুজের বৈজ্ঞানিক নাম সিট্রোলাস ভালগারিস। তরমুজ বলতে আমরা লাল রঙের জানি। কিন্তু আধুনিক কৃষি গবেষণার কাজে যুক্ত কৃষি গবেষণা উদ্ভিদ প্রজননবিদের অন্যতম একটি আবিষ্কার হচ্ছে হলুদ রঙের তরমুজ অর্থাৎ ভেতরের খাবার অংশ লালের পরিবর্তে হলুদ রঙের। তিনি বলেন, এটা মূলত লাইকোপিন নামক পিগমেন্টের জন্য তরমুজ, টমেটো ইত্যাদির রঙ লাল হয়। এই উপাদানটি হলো এন্টিঅক্সিডেন্ট। তরমুজের ভেতরের অংশ হলুদ হওয়ার কারণ হচ্ছে বিটাকরোটিন এবং জেন্তফিলের উপস্থিতির জন্য। হলুদ তরমুজ খেতে খুব সুস্বাদু এবং সুমিষ্ট। গত গ্রীষ্ম এবং বর্ষা মৌসুমে উদ্যান গবেষণাকেন্দ্রে নতুন এই ধরনের তরমুজ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হচ্ছে। রাজ্যে তরমুজ চাষের প্রধান মৌসুম হচ্ছে গ্রীষ্মকাল। এর জন্য চাষিরা ডিসেম্বর মাসে বীজ বপন করেন। তবে, তুলনামূলক কম হলেও সারা বছর ধরে এখন তরমুজ চাষ হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে দুই ধরনের তরমুজ চাষ করা হয়েছে। এগুলো ইয়েলো বক্স এবং ইয়েলো গোল্ড। এরমধ্যে ইয়েলো গোল্ড খুব ভালো।
এই গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বলেন, এই জাতের তরমুজ একেকটি প্রয়োজন সর্বোচ্চ প্রায় তিন কেজি পর্যন্ত হয়েছে। লাল রঙের তরমুজ খেতে কিছুটা স্পঞ্জি। কিন্তু হলুদ তরমুজ খেতে মুচমুচে হয়। হলুদ তরমুজের আদি ভূমি হলো আফ্রিকা মহাদেশ। সেখান থেকে আসার পর সঙ্করায়ন ঘটিয়ে এর গুণগত মানকে আরও উন্নত ভারতবর্ষের আবহাওয়ায় চাষের উপযুক্ত করা হয়েছে। লাল তরমুজের তুলনা হলুদ তরমুজের চাহিদা এবং দাম বেশি। বিভিন্ন বনেদি হোটেলে নানা রকমারি খাবারের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এই তরমুজ ব্যবহার করা হয়। ত্রিপুরা রাজ্যের আবহাওয়া নতুন ধরনের এই তরমুজ চাষের উপযোগী। দপ্তর চাইছে রাজ্যের চাষিরাও এই ধরনের তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাক এবং আর্থিকভাবে লাভবান হোক। ফসল বৈচিত্র্যকরণের যে বিষয় রয়েছে এই কাজে হলুদ তরমুজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিক এটাও চাইছেন ড. রাজীব ঘোষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২১
এসসিএন/এএটি