ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

অশনির আশঙ্কায় পশ্চিমবঙ্গ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, মে ৯, ২০২২
অশনির আশঙ্কায় পশ্চিমবঙ্গ

কলকাতা: রোববার দুপুর থেকেই কলকাতার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে বইছে বাতাস, হতে পারে বৃষ্টি।

এরইমধ্যে রোববার (৮ মে) বঙ্গোপসাগরে জন্ম নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় অশনি।

দিল্লির আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আন্দামানের কাছে থাকা গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এবং তা প্রতি ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে আসছে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর বরাবর।

আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, সদ্য তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের পুরী থেকে ১ হাজার ৩০ কিলোমিটার এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে ৯৬৯ কিলোমিটার দূরে রয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ মে) নাগাদ উড়িষ্যা কিংবা অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত আনতে পারে।

এদিন দুপুরে কলকাতা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এখন অশনি সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হলেও রোববার রাতে মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে সিভিয়ার সাইক্লোনে পরিণত হবে। মঙ্গলবার (১০ মে) সন্ধ্যায় অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে পৌঁছনোর কথা অশনির। তারপর সামান্য দিক পরিবর্তন করে উত্তর দিকে অর্থাৎ উড়িষ্যার দিকে এগিয়ে যাবে। তবে কোন পথে স্থলভাগে প্রবেশ করবে তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া দফতরের কর্মকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আপাতত উড়িষ্যার উপকূলের দিকেই এগোচ্ছে অশনি। গতিপথ উত্তর-পশ্চিম। সোমবার (৯ মে) থেকেই উড়িষ্যা উপকূলে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া বওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর জেরে মঙ্গলবার (১০ মে) থেকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের জেলাগুলোতে বৃষ্টি শুরু হবে। ১১ তারিখ থেকে ১২ মে পর্যন্ত দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। কারণ, যদি অশনি দিক পরিবর্তন করে? তবে ঘূর্ণিঝড় না হলেও আগামী ১০ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা জুড়ে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র সৈকতগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ১০মে থেকে ১২মে পর্যটকদেরও সতর্ক করা হয়েছে। ১০ মে থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্র যেতে বারণ করা হয়েছে। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিকে। বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাকে।

পাশাপাশি মমতার প্রশাসনের তরফে ৫টি ‘কুইক রেসপন্স টিম’ তৈরি করা হয়েছে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রিপল, চাল, ওষুধ, শুকনো খাবার এবং পানীয় জলের বোতল মজুত রাখতে শুরু করেছে প্রশাসন। হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বিপথগামী এলাকায় নৌকা রাখা হয়েছে যাতে বিপদগ্রস্তদের অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়া যায়। পাশাপাশি একাধিক অস্থায়ী আশ্রয়স্থল তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। গাছ ভেঙ্গে পড়লে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে প্রস্তুত রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়র অশনির কারণে পিছিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফর। ১০ মে পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। তবে রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন সূত্রে থেকে জানা যায়, আপাতত সেই সফর বাতিল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১৭ মে দু’দিনের জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২২
ভিএস/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।