কলকাতা: কলকাতা থেকে কাকদ্বীপ, কোচবিহার থেকে নবদ্বীপ -পশ্চিমবঙ্গজুড়ে চরম ডেঙ্গু আতঙ্ক। দু’বছর আগের পরিসংখ্যানকেও ছাপিয়ে গিয়েছে এবারের সংক্রমণের হার।
হিমশিম খাচ্ছে পুরনিগম, পুরসভা এবং পঞ্চায়েত প্রধানরা। বাংলায় কেনো ডেঙ্গুর এত রমরমা? শুধুই কী জমা পানি? নাকি সাধারণ নাগরিকের অসচেতনতা? এবার এসব নিয়ে বুধবার (৯ নভেম্বর) কৃষ্ণনগরের দলীয় জনসভায় ব্যাখ্যা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ডেঙ্গু নানারকম জিন নিয়ে বারেবারে আসে। আমি পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিধায়ক, সাংসদ প্রত্যেককে বলব, সতর্ক থাকুন। এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। মশা বাড়তে দেবেন না। পাশাপাশি মমতার আশ্বাস, ডেঙ্গু সমস্যা অচিরেই কমবে।
তিনি বলেন, এখন কোভিড নেই বললেই চলে। কিন্তু ডেঙ্গু আছে। তবে ওটাও নিম্নমুখী। যত শীত পড়বে তত কমে যাবে।
ডেঙ্গু নিধনে মমতার আর্জি, অনেক জায়গায় অনেক পূজা হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। যার ফলে বহু জায়গায় আবর্জনা জমেছে। তাই মশা বাড়ছে। কোথাও পানি জমতে দেবেন না। বাড়ির আশেপাশে আবর্জনা জমতে দেবেন না। নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারও সচেতন হোন।
মঙ্গলবারই (৮ নভেম্বর) রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন থেকে জেলা প্রশাসন কর্তাদের সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেখানে মূলত জোর দেওয়া হয়েছে, জেলায় জেলায় টিম পাঠানোর। যে সব জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি বেশি খারাপ এবং উদ্বেগজনক, সেখানে সরকারী বিশেষজ্ঞ টিম পাঠিয়েছে নবান্ন।
এছাড়া হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্তদের ভর্তির ক্ষেত্রে শুরুতেই রোগীর অন্য কোনও অসুস্থতা রয়েছে কি না তা দেখতে বলা হয়েছে। হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা ফিভার ক্লিনিক চালু রাখতে বলা হয়েছে। প্রকোপ বেশি এমন কয়েকটি এলাকায় সরকারি হাসপাতাল যেমন কলকাতার পিজি, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল, হাওড়া জেলা, শ্রীরামপুর জেলা হাসপাতাল, শিলিগুড়ি পুর হাসপাতাল ২৪ ঘণ্টা টেস্টের ব্যবস্থা চালু রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুলত, রাজ্যের ৬টি জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কলকাতা-সহ সেই তালিকায় রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ এবং জলপাইগুড়ি। এদিন ডেঙ্গু নিয়ে শহরবাসীকে সচেতন করতে পথে নেমেছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ঘুরে দেখছেন শহরের বিভিন্ন এলাকা।
চিকিৎসকদের মতে, শীত জাঁকিয়ে পড়লেই ডেঙ্গুর প্রভাব অনেকটাই কমবে। শুরুর দিকে পশ্চিমবঙ্গে প্রভাব বিস্তার করেছিল ডেঙ্গু-৩ ভ্যারিয়্যান্ট। পরে শহরে সংক্রমণের হার বাড়ায় ডেঙ্গু-২ প্রজাতি।
উল্লেখ্য, ডেঙ্গু-৩ এর প্রভাবে সাধারণত প্লাটিলেট কমে গিয়ে রোগীর বিপদ ডেকে আনে এবং ডেঙ্গু-২ প্রজাতির প্রভাবে রোগীর একাধিক অঙ্গে শক সিন্ড্রোম দেখা দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, ০৯ নভেম্বর, ২০২২
ভিএস/এসএ