ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

বিধানসভা নির্বাচন

ভোটে আগ্রহ নেই গুজরাটি মুসলমানদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২
ভোটে আগ্রহ নেই গুজরাটি মুসলমানদের

কলকাতা: দুয়ারে চলে এসেছে ভারতের গুজরাট রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। যে ভোটের দিকে তাকিয়ে গোটা ভারত।

মোদী-শাহের রাজ্যে প্রথম ধাপে ভোট হবে ১ ডিসেম্বর এবং দ্বিতীয় ধাপে ৫ ডিসেম্বর। এরপর ৮ ডিসেম্বর ফলাফল ঘোষণা।

১৮২ বিধানসভা আসন বিশিষ্ট রাজ্যটিতে এ বছর বহুদলীয় সম্ভাবনাকে সামনে রেখেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে চলেছে। তবে রাজ্যটির মুসলমান ভোটারদের তাতে কিছু আসে-যায় না।

তাদের অভিযোগ, ভোটের সময় নানা কথা বলে, শেষ হলে কোনো দলই এখনও পর্যন্ত তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। তাই ভোট এলো বা গেলো, তাতে তাদের কোনো আগ্রহ নেই।  

তবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো মুসলিম ভোটব্যাংক নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক এবং সমীহ করে চলছে। কারণ, গুজরাটের ৬ কোটি ২৭ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৯ শতাংশ মুসলমান। কিন্তু, সেই ভোটাররাই এবারের নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন।

এবারে ১৮২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৬ জন মুসলিমকে প্রার্থী করেছে। বিজেপির সংখ্যালঘু একজন খ্রিস্টান প্রার্থী রয়েছে। দলটি ১৯৯৮ সালে শেষবার ভাগরা বিধানসভা কেন্দ্রে একজন মুসলিম প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। তারপর থেকে বিজেপি আর কোনও মুসলিম প্রার্থী দেয়নি।

তবে এবারের গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে বড় ভূমিকা দেখা যেতে পারে আম আদমি পার্টি-র। তারা ৩ জন মুসলিম প্রার্থী দিয়েছে। এছাড়া, সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন (এআইএমআইএম) মোট ১৩টি আসনের জন্য মনোনয়নপত্র পেশ করেছে। তারমধ্যে ১১ জন মুসলিম প্রার্থী। অবশ্য রাজ্যটিতে মুসলিম সম্প্রদায় থেকে বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও আছেন।  

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট, কংগ্রেসের ভোটেই ভাগ বসাবে।  তাদের ধারণা, গুজরাটের মুসলিম ভোটব্যাংক ঐতিহ্যগতভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু, গুজরাটে কংগ্রেসেরই গুরুত্ব কমেছে। একইসঙ্গে কংগ্রেস কমিয়ে দিয়েছে মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যাও।  

তথ্য মতে, ১৯৯৮ সালে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে ৯ জন মুসলিম প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস। ২০০২ সালে তা কমে ৫ জনে দাঁড়ায়। পাঁচ বছর পর ২০০৭ সালে সংখ্যাটা বেড়ে হয় ৬-এ। কিন্তু ২০১২ সালে ফের সেই সংখ্যা কমে ৫-এ দাঁড়ায়। এরপর ২০১৭ এবং ২০২২ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা ৬ জন।

তবে এবারে গুজরাটের সমীকরণের বদল হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। প্রায় ২৭ বছর ধরে গুজরাটে টানা ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। বর্তমান পরিস্থিতি এবং প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়াটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

অপরদিকে, দিল্লি ও পাঞ্জাব জয়ের পর আম আদমি পার্টি গুজরাট নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল ‘কিং মেকার’ হয়ে উঠতে পারেন। একইভাবে কংগ্রেস, তাদের সীমিত শক্তি নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

ফলে, সব দলই চাইছে সেখানকার মুসলমানরা ভোটে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করুক। তারা যদি এবারের নির্বাচনে সক্রিয় অংশ নেয়, সেক্ষেত্রে চিন্তায় পড়তে পারে বর্তমান শাসক দল।  

কিন্তু কোনও দলই এখনও পর্যন্ত তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। ফলে, এবারের নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই।  

মুসলমান সম্প্রদায়ের অভিমত, ভোট এলো বা গেলো, তাতে তাদের কিছু যায়-আসে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২
ভিএস/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।