ঢাকা: পাঁচ হাজার ২০৬টি শিল্প কারখানা পরিদর্শন শেষে ১৭টিকে তিন মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তাদের যেসব ঘাটতি রয়েছে, সেগুলো পূরণ করতে হবে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মেলনকক্ষে কল-কারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনা রোধ ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
সালমান এফ রহমান বলেন, আজ আমাদের জাতীয় কমিটির দ্বিতীয় সভা হয়েছে। এতে আমরা প্রতিবেদন পেয়েছি। সেখানে আমাদের যে স্কোরিং হয়েছে, সে অনুসারে ১৭টি কারখানা ২৫ নম্বর কম পেয়েছে। তাদের নোটিশ দিয়ে দিচ্ছি, তিন মাসের মধ্যে তাদের কমপ্লাইন্ট দিতে হবে, যদি না দিতে পারে তাহলে তাদেরকে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, তাদের অবস্থা এতই নাজুক যে, তাদের যদি এর বেশি সময় দিই, তাহলে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অঘটন যাতে না ঘটে, সে কারণে তাদের এ সময় দেওয়া হয়েছে। তারা যদি উন্নয়ন করে, ঘাটতি দূর করে, আমরা পরিদর্শন করে যদি সেটা দেখতে পাই, তখন তাদের আরও সময় দেব। কিন্তু তাদের বর্তমান অবস্থা এতটাই খারাপ যে তিন মাসের মধ্যে উন্নয়ন করতে না পারলে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
এছাড়া ২০৬টি কারখানা ৫০ মার্ক কম পেয়েছে। তাদের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে ছয় মাস সময় দেওয়া হবে। এরমধ্যে সফল না হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। বাকি যতগুলো আছে, সবাইকে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। তাদের এক বছরের মধ্যে কমপ্লাইন্ট দিতে হবে।
তিনি বলেন, ধরেন, আমরা একটি প্ল্যান (পরিকল্পনা) পাস করে দিয়েছি, কিন্তু যখন একটি ভবন নির্মাণ করা হয়, তখন তাতে সেই প্ল্যান অনুসরণ করা হয়েছে কিনা; সেটা দেখার জন্য বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি হবে। এতে ভবনের অনুমোদনের পাশাপাশি, তার ইনসপেকশনও ঠিকঠাক মতো হবে। রাজউক কিন্তু প্ল্যানের অনুমোদন দেয়, কিন্তু সেখানে বৈদ্যুতিক সংযোগ কেমন হবে, অবকাঠামো কেমন হবে; সেটা কিন্তু দেখা হচ্ছে না। কাজেই যখন বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি বাস্তবায়ন হবে, তখন সবকিছু সেই আইন অনুসারে ঠিক করা হবে। এটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি করতে বলেছি।
ফজলুর রহমান বলেন, আমরা ইন্টারিমে কী করবো, তাও ঠিক করেছি। একটি সাব-কমিটি করে দিয়েছি। স্ট্র্যাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার, তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হবে। এ প্ল্যানগুলো পাশের জন্য তাদের কর্তৃত্ব দেওয়া হবে। সব জায়গায় তালিকাটা আমরা জানিয়ে দেব। এটা কিন্তু ইন্টারিম। যাদের নাম তালিকায় থাকবে, তারা সার্টিফাই করলেই কেবল প্ল্যানটা পাস হবে।
প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে এখন ৬০ হাজার কারখানা আছে। এগুলো সব তো আর পরিদর্শন করা সম্ভব না। আমরা পাঁচ হাজার ২০০টি করেছি। এরপর আবার দশ হাজার করবো। এসব পরিদর্শন শেষে আমরা প্রতিবেদনগুলো এসব কারখানাগুলোকে জানিয়ে দেব। আমি মনে করি, পরিদর্শন শেষে যাদের বলবো উন্নয়ন করতে, তারা যদি সেটা না করে। এরপর যদি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়, তবে তা সবার জন্য একটি বার্তা হিসেবে যাবে। যদি ৬০ হাজার কারখানা পরিদর্শন নাও করি, যদি এলোপাতাড়ি করা শুরু করি, যখন যাদের দুর্বলতা পাবো, তাদের ঠিক করতে সময় দেব। নাহলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি যখন পাস হয়ে যাবে, তখন অনেক সমস্যা কমে যাবে। কারণ তারাই ভবন পরিদর্শনের দায়িত্ব পাবেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, আইন অনুসারে পরিদর্শনের দায়িত্বটা শ্রম মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডাইফি)। আমরা বলছি, তাদের শক্তিশালী করা দরকার। ডাইফিকে কর্তৃপক্ষ করে দিতে যদি সুপারিশ করতে পারি। তাহলে ইনসপেকশন আরও বাড়বে। পাঁচ হাজার ২০৬টি কারখানা যে আমরা পরিদর্শন করেছি, যেহেতু জাতীয় কমিটি ও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এই দায়িত্বটা দিয়েছিলেন। ডাইফি, এফবিসিসিআইসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বিডা এই পরিদর্শন করেছে।
কিন্তু এটি তো অ্যাডহক ভিত্তিতে করা হয়েছে। এটিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে হবে। আমরা মনে করি, কাজটি যেহেতু আইন অনুসারে ডাইফির। আজকের জাতীয় কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে ডাইফিকেই শক্তিশালী করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৩
জিসিজি