ঢাকা: স্বর্ণ খাত কুটির শিল্প থেকে বৃহৎ শিল্পে রূপান্তর হচ্ছে। এ জন্য স্বর্ণ খাতের দক্ষ জনশক্তিকে সংরক্ষণের পাশাপাশি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল ও রপ্তানিতে বাজার অনুসন্ধানের তাগিদ দিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তা-বক্তারা।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বাজুস ফেয়ার-২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) আয়োজিত ‘স্বর্ণালংকার রপ্তানি সম্ভাবনা ও বিশ্ববাজার’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এ কথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অথিতির বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমিন বলেন, সরকার অর্থনৈতিক কূটনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নই শুধু নয়, রপ্তানির জন্য নতুন নতুন বাজার, বৈদেশিক বিনিয়োগ সহায়ক কাজও করছে। রপ্তানি বহুমুখি করার যে লক্ষ্য সরকারের রয়েছে, এ ব্যাপারে কাজ করছে। আজকে বাজুসের পক্ষ থেকে স্বর্ণালংকারের মতো পণ্য রপ্তানির যে চিন্তা করা হচ্ছে, নিশ্চই তা আমাদের লক্ষ্যের মধ্যে পড়বে। সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) এএইচ এম আহসান বলেন, স্বর্ণালংকার রপ্তানির ক্ষেত্রে নীতিমালায় কোনো বাধা নেই, বরং সহায়ক। এ জন্য প্রয়োজন নীতির প্রয়োগ। ২০১৭ সালে প্রণীত ও ২০২১ সালে সংশোধিত স্বর্ণ আমদানি নীতি আমদানি বা স্বর্ণালংকার রপ্তানির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কোনো আশঙ্কা নেই। যথাযথ প্রয়োগ ও এনবিআরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে কাজ করতে হবে।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, স্বর্ণ খাত এতদিন ধুক-ধুকপ্রাণ শিল্প ছিল। এখন বড় বিনিয়োগের ফলে স্বর্ণ ব্যবসার চরিত্র বদলে গেছে; শিল্পের মর্যাদা পেয়েছে। এখন স্বর্ণাঙ্কারের চরিত্র যেমন বদল হয়েছে, উৎপাদিত পণ্যর মানের উন্নতি করতে হবে। দুবাই, লন্ডনের স্বর্ণালংকার যেমন সুনাম আছে, মান-উন্নয়নের মাধ্যমে সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, স্বর্ণ প্রক্রিয়াকরণ, স্বর্ণালংকার তৈরির কারখানাগুলোর নিরাপত্তা ও রক্ষণা-বেক্ষণের দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।
দেশে স্বর্ণকাররা আর্থিক সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে কেউ দেশ ছাড়ছে, কেউ পেশা ছেড়ে দিয়ে ভিন্ন পেশায় চলে যাচ্ছে। এ সব মানুষকে পেশায় ধরে রাখার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বর্ণশিল্পের ঐতিহ্য-স্মারককে এগিয়ে নিতে হবে; শিল্পের মতো এসব কারিগরদের সম্মাননা দিতে হবে, তিনি যোগ করেন।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম বলেন, নিজস্ব স্বর্ণ না থাকায় রপ্তানির পথে এতদিন বাধা ছিল। স্বর্ণ খাতে বড় বড় বিনিয়োগ হচ্ছে, নিজস্ব রিফাইনারি হচ্ছে। ইউরোপের বাজারে তৈরি পোশাক যেমন ট্যারিফ সুবিধা পায় নিজস্ব স্বর্ণ হওয়ার পর বৈদেশিক বাজারে এসব সুবিধা খুঁজে বের করতে হবে। যাতে আগামীতে তৈরি পোশাকের মতো স্বর্ণও একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরিণত হয়।
আরও বক্তব্য দেন বাজুসের সহসভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম, সহসম্পাদক মাসুদুর রহমান, নির্বাহী সদস্য আলী হোসেন ও জয়দবে সাহা।
বাজুসের সাবেক সভাপতি দিলীপ কুমারের সভাপতিত্ব সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাসরুর রিয়াজ, উপস্থাপনা করেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩
জেডএ