ঢাকা: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ঝুঁকি আছে, তাই বিনিয়োগকারীদের জেনে বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে। আমেরিকা বা ভারতের সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে আমাদের দেশে নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা অনেক কম।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ডিএসই ট্রেনিং একাডেমিতে নারী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগকারী সচেতনতামূলক কর্মশালার সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম এসব কথা বলেন।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার, ডিএসইর উপ মহাব্যবস্থাপক ও ট্রেনিং একাডেমির প্রধান সৈয়দ আল আমিন রহমান।
বিএসইসি কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম বলেন, সাবধানতা অবলম্বনের ক্ষেত্রে ও সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে বা যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েরা ঝুঁকি কম নিতে পছন্দ করেন যা বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত। সঞ্চয়কৃত অলস টাকা হতে পারে শেয়ারবাজারের মূলধন। নারীরা বাবার কাছ থেকে, স্বামীর কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ বা চাকরি করে প্রাপ্ত অর্থের একটা অংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে অলস টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এ অলস টাকা হতে পারে আপনাদের সঞ্চয়ের একটা একক অংশ। এমন টাকা যা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করা যাবে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগে ঝুঁকির মাত্রা কমিয়ে লাভবান হওয়া যায়। তাই ঝুঁকি কমাতে ধৈর্য সহকারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে মনোযোগী হতে হবে। আজ বিনিয়োগ করে কালই মুনাফা ঘরে তোলার মনোভাব বর্জন করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন শেয়ার কখন কিনবেন এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণে আপনাদের সহায়তাকরণের জন্যই এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নারী-পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণের প্রয়াসে ও নারী বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারের সক্রিয় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে এ ধরনের সচেতনতামূলক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। পুঁজিবাজার বলতে আমরা শুধু শেয়ার বুঝি, কিন্তু পুঁজিবাজারে আরও অনেক বিনিয়োগযোগ্য প্রডাক্ট রয়েছে যেখানে আপনি বিনিয়োগ করতে পারবেন, কোথায় বিনিয়োগ করবেন তা আপনি কতটুকু ঝুঁকি নিতে পারছেন তার ওপর নির্ভরশীল। নারীদের পুঁজিবাজারে অংশ গ্রহণ করা উচিত কারণ দেশের প্রেক্ষাপটে অনেক ডিগ্রিধারী, যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও দেখা যায় তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠে না বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে। অনেক সময় কর্মজীবনে উন্নতি করার জন্য যতটুকু সময় বা মেধার বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন সেই সুযোগ নারীরা পায় না পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে। আর তাই নারী বিনিয়োগকারীরা যদি পুঁজিবাজারে সক্রিয় থাকেন তাহলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অন্য কাজের পাশাপাশি শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন। তাছাড়া প্রত্যেকটা নারীর অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া খুবই প্রয়োজনীয় তাদের যেকোনো অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সামলানোর জন্য। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত না জনগণের অর্ধেক নারীদের সম্পৃক্ত করতে পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত এ উন্নয়ন সম্পূর্ণকরণ সম্ভব নয়। নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ যতই সম্পৃক্ত করতে পারব ততই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সমৃদ্ধ হবে।
এর আগে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, এ কর্মসূচি হলো আপনাদের এ বিষয়ে স্টার্টিং পয়েন্ট। পরে আপনাদের এ বিষয়ে অনেক অনুশীলন করতে হবে।
এ কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দেন ডিএসইর উপ মহাব্যবস্থাপক ও ট্রেনিং একাডেমির প্রধান সৈয়দ আল আমিন রহমান এবং বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
এসএমএকে/আরআইএস