বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, বিদ্যমান বেঁধে দেওয়া সুদহার তুলে দিয়ে বাজারভিত্তিক করার কাজ চলছে। বাজারভিত্তিক করা হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার।
অর্থাৎ ব্যাংকঋণের সুদহারের সীমা তুলে দিয়ে সুদহারের ‘করিডোর’ চালু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক; এজন্য বাজারভিত্তিক ‘রেফারেন্স রেট’ চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
রোববার (১২ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত বিজনেস সামিটের দ্বিতীয় ‘লং টার্ম ফাইন্যান্স’ শীর্ষক প্লেনারি অধিবেশনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
অধিবেশন সঞ্চালনা করেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান ড. আরিফ রহমান।
আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, আমরা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছি। একাধিক হারও বাদ দেব। শিগগিরই একটি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা দেখতে পাবেন। এ ছাড়া আমরা সুদের হার নিয়ে কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে আমানতের সুদের হারের ফ্লোর এবং সিলিং প্রত্যাহার করা হয়েছে। একটি করিডর দেওয়া হবে সুদ হারের, তা হবে বাজারভিত্তিক রেফারেন্স রেট অনুযায়ী। খুব শিগগিরই আমরা এই নতুন উদ্যোগটি চালু করতে সক্ষম হব।
খেলাপি ঋণ নিয়ে গভর্নর বলেন, খেলাপি ঋণ কমাতে আমরা উদ্যোক্তাদের ঋণের বদলে গ্যারান্টি দেব। আর উদ্যোক্তারা শেয়ারবাজার থেকে বিনিয়োগ তুলবে। ব্যাংক গ্যারান্টি থাকলে বিনিয়োগকারীরা আশ্বস্ত হবেন, অন্যদিকে যারা টাকা নিচ্ছেন তাদের মধ্যে খেলাপির মনোভাব কমে আসবে।
বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দিয়ে আবদুর রউফ বলেন, বন্ড মার্কেট শক্তিশালী করতে পারলে বাজারে বিনিয়োগের ধারা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন ব্যবস্থা টেকসই নয়। কারণ দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ৯৯ শতাংশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান করে থাকে। মূলত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বল্পমেয়াদি অর্থ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করে থাকে। এ বিষয়টি হচ্ছে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ।
অধিবেশনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে আরও অনেক অনেক বেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী প্রয়োজন। এখানে যত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী রয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাড়লে আমাদের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবেন এবং বিনিয়োগ বাড়বে।
আসিফ ইব্রাহিম বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে ডেরিভেটিভস মার্কেট চালু করতে কাজ চলছে। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডেরিভেটিভস মার্কেট চালু করতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কাজ করে যাচ্ছে। আর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) রিয়েল এস্টেট ডেরিভেটিভ মার্কেট (আরইআইটি) নিয়ে কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
এসএএইচ