ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, কয়েক বছর পরে রমজান উন্মুক্তভাবে হচ্ছে, এবার ইফতার পার্টিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান বেশি হবে। সে কারণে হয়তো জিনিসের দাম একটু বাড়তে পারে তবে সমস্যা হবে না।
রোববার (১৯ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ষষ্ঠ সভা’ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ সকল স্টেক হোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রমজান পণ্য যেন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে, এ বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এ নিয়ে গত ১৫-২০ দিন ধরে কথা বলছি। একটা টেন্ডেন্সি আমরা লক্ষ্য করি রোজা শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহ থেকে সব মাল ঘরে ঢুকিয়ে ফেলি। তাহলে সাপ্লাই চেন কোথা থেকে আসবে। সাপ্লাইয়ের তো একটা সিস্টেম আছে।
তিনি বলেন, আমরা জাতির সামনে একটি কথা বলতে চাই, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। পর্যাপ্ত পণ্য রয়েছে, রমজান সামনে রেখে আমাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ।
টিপু মুনশি বলেন, যা খরচ, তার চেয়েও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। তবে কয়েক বছর পরে রমজান উন্মুক্তভাবে হচ্ছে, এবার ইফতার পার্টিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান বেশি হবে। যে কারণে দাম একটু বাড়তে পারে, সমস্যা হওয়ার কথা না।
তিনি বলেন, পেঁয়াজ যথেষ্ট পরিমাণ আছে। ভারত থেকে আমদানিও স্লো (ধীরগতি) করে দিয়েছি। যাতে করে আমাদের কৃষকরা (দাম) পায়। ভোক্তারাও যাতে ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারে।
শাকসবজির গাড়িতে চাঁদাবাজি বন্ধে শক্তভাবে মনিটর করা হবে। সচিবকে বলেছি, ডিসি পর্যায়ে সরাসরি বলে দিতে মহাসড়কগুলো দিয়ে খাদ্যসামগ্রী, শাকসবজি নিয়ে আসা যায়। এসব ট্রাক যাতে কোথাও না থামায়। কোনো অবস্থাতেই চাঁদাবাজি করতে দেওয়া যাবে না।
মুরগির দাম নিয়ে কাজী ফার্মের একজন পরিচালক ভোক্তা অধিকারের কাছে সম্প্রতি বলেছেন মুরগির উৎপাদন খরচ ১৩০ টাকা আর পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন ১৯০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা পর্যন্ত। এই যে মূল্যের ব্যবধান সে বিষয়ে আপনারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, মুরগির দামের বিষয়ে কেউ একজন এসে বলে গেছে সেটা তার বক্তব্য। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রী বলেন, তারাই বিবেচনা করে মুরগির মূল্য ঠিক করে দেবে। তারা যদি ঠিক করে দেন মুরগীর উৎপাদন খরচ ১৩০ বা ১৪০ টাকা এবং এটার প্রকৃত মূল্য হচ্ছে ১৭০ টাকা এটা যদি তারা ঠিক করে দেন তাহলে আমাদের ভোক্ত অধিকার সে মূল্যেই তাদেরকে ধরবে। তাহলে আমরা এ বিষয়টি ঠিক করতে পারবো।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে গেছে, আমাদের দেশের বাজারে কমানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখুন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে গেছে এটা ঠিক। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের তেলের দাম কমলেও ডলারের দাম বেড়ে গেছে। যদি এমনটা হতো তেলের দাম কমেছে ডলারের দাম আগের অবস্থায় রয়েছে তাহলে তেলের দাম কমানো যেতো। তারপরও আমরা দেখছি, যদি কিছু করা যায়।
টিপু মুনশি বলেন, রমজান মাস সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের বলেছি আমরা আবার রমজানের পর আপনাদের নিয়ে বসবো। এ সময়টায় আর কোনো অবস্থাতেই পণ্যের দাম বাড়াবেন না। এবিষয়টি ব্যবসায়ীরা মেনে নিয়েছেন।
মন্ত্রণালয় দাম নির্ধারণ করে দিলেও মাঠ পর্যায়ে গিয়ে মিল পাওয়া যায় না সে বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, একটু আগেই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়ে আমাদের যা প্রয়োজন তার মিনিমাম দেড়-গুণ তাদের কাছে মজুদ রয়েছে। তাদের হাতে ও পাইপ-লাইনে আছে। তেল এবং চিনি তাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে আছে। ছোলা যে দামে আনা হচ্ছে তার থেকে কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, সাংবাকদিকরা বাজারে গেলে গড়মিল পাচ্ছেন সেটাও ঠিক। তবে এটাও ঠিক কারওয়ান বাজারে যে দাম উত্তরার বাজারে তার থেকে ২০ টাকা বেড়ে যেতে পারে। যদি বলেন কারণ বাজারে ৫০ টাকা উত্তরায ৮০ টাকা। তাহলে ৮০ টাকা ধরেই দাম বাড়ানো শুরু করবে। তাই লেখার আগে একটু পজিটিভ লিখলেই বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
জিসিজি/এসআইএস