ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পোশাকের দোকানে প্রাইজ গান পাওয়া গেলে ১০ দিন বন্ধের হুঁশিয়ারি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
পোশাকের দোকানে প্রাইজ গান পাওয়া গেলে ১০ দিন বন্ধের হুঁশিয়ারি

ঢাকা: দেশের কোনো পোশাকের দোকান, শো-রুম বা ব্র্যান্ডের আউটলেটে যদি প্রাইজ গান পাওয়া যায়, তাহলে সেটি ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক বা কাপড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এ হুঁশিয়ারি দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।

 

কারওয়ান বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

মতবিনিময় সভার স্বাগত বক্তব্যে মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, আমরা প্রথমবার কাপড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এভাবে বৈঠকে বসেছি। বৈঠকে বসার উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কাপড়ের গুণগত মান যেন ভালো থাকে। আমাদের দেশে বিদেশিদের আগমন বেড়েছে। তারা যেন কাপড়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারেন।

কাপড়ের প্রাইস ট্যাগ ফ্যাক্টরিতে লাগানোর কথা জানিয়ে তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি, একই শার্টের মধ্যে দামের দুইটি-তিনটি প্রাইজ ট্যাগ থাকে। ভোক্তা হিসেবে আমি মনে করি এটি মারাত্মক প্রতারণা। বিক্রেতা যেহেতু বিক্রি করবে, সেহেতু মূল্য তিনি নির্ধারণ করবে। তবে সেটি ফ্যাক্টরি থেকে নির্ধারিত হয়ে আসবে। আউটলেটে বসে প্রাইজ গান দিয়ে কোনোভাবে মূল্য ঠিক করা যাবে না। এ প্রাইজগান যদি কোনো দোকানে বা আউটলেটে বা শো-রুমে পাওয়া যায়, তাহলে সে প্রতিষ্ঠান, দোকান বা আউটলেট আমরা ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঈদের আগে একদিনও দোকান বন্ধ থাকলে ব্যবসার কত বড় ক্ষতি হবে সেটা আপনারাই চিন্তা করেন। সে সঙ্গে ইমেজও নষ্ট হবে। তাই দয়া করে আপনারা এ ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।

সভায় ঈদ উপলক্ষে একই পোশাকের দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় বাড়িয়ে দেওয়া, একটি পোশাকে বিভিন্ন দামের প্রাইজ ট্যাগ লাগানো, সিট কাপড়ের ক্ষেত্রে মিটারের পরিবর্তে গজের ব্যবহার, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, আসল বলে নকল কাপড় বিক্রি করা, রেডিমেড গার্মেন্টসের ক্ষেত্রে মোড়কের গায়ে এমাআরপি না লেখা, এমআরপি ঘষামাজা বা কাটাকাটি করে বেশি মূল্য নির্ধারণ করা, পুরাতন মূল্যের উপর নতুন স্টিকার লাগিয়ে বেশি মূল্য নেওয়া, শতভাগ কটন ঘোষণা দিয়ে শতভাগ কটন না দেওয়া, কাটা ফাটা পোশাক বিক্রি করা, সময়মতো পোশাক পরিবর্তন করে না দেওয়া এবং ভোক্তাদের পেমেন্টের ক্ষেত্রে লম্বা লাইনে অপেক্ষমাণ না রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

আলোচনা শেষে বিভিন্ন কাপড়ের ব্রান্ডের প্রতিষ্ঠান থেকে আগত প্রতিনিধিরা সব নির্দেশনা অনুসরণ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। ।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, বিদেশি পোশাক ও কসমেটিক্সের ক্ষেত্রে আমদানিকারকের নাম ও সিল থাকতে হবে এবং এমআরপি আমদানিকারকের প্রদেয় হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে অনেক সময় দেখা যায় পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে কিছু বিক্রয়কারী আমাদের দেশে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে ভেতরে ভেতরে টার্গেট কাস্টমারের কাছে বিদেশি কাপড় বিক্রি করছে। এ ধরনের কার্যক্রম দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এক্ষেত্রে তথ্যগুলো আমাদের কাছে দেওয়া হলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা চাই সবাই আইন মেনে ব্যবসা করুক এবং ভোক্তারা যেন ন্যায্য মূল্যে পণ্য পান। শপিংমলগুলোতে অনিয়ম পেলে মার্কেট কমিটিকে দায়ী করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।    

এ সময় তিনি নকল পণ্যের বিষয়েও ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন এবং এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান। পাশাপাশি আসন্ন পবিত্র ঈদে কাপড় ব্যবসায়ীরা মূল্য ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ভোক্তাদের স্বস্তি দেবেন এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ সময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা, গোয়েন্দা সংস্থা ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি এবং আড়ং, আটিসান, অঞ্জনস, টপটেন, লুবনান, নগরদোলা, রং বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি ও কাপড় ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।