ঢাকা: বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের নিত্যপণ্য। রোজার আগে বেড়ে যাওয়া দামের তালিকা ঝুলিয়ে পণ্য বিক্রি করছেন দোকানদাররা।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর, আগারগাঁও, ফার্মগেট মোহাম্মদপুর এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র মিলেছে।
নিত্যপণ্যের মূল্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে সিটি করপোরেশন, ভোক্তা অধিকারসহ বিভিন্ন সংস্থা। এর ফলে দোকানদাররা কেনা ও বিক্রয় মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। তবে বাজারের দোকান থেকে গলির দোকানগুলোতে পণ্য ভেদে কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতি কেজি চিকন চাল (মিনিকেট) ধরন ও বাজার ভেদে ৭২ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইজাম ৪৮ থেকে বাজার ভেদে ৫০ টাকা, আটাশ চালের কেজি ৫৫ থেকে বাজার ভেদে ৫৮ টাকা। নতুন ধানের চাল কিছুটা কম বলে জানিয়েছে দোকানদাররা। তবে পুরাতন চাল দোকানে মজুদ থাকায় ইচ্ছা করেই নতুন চাল দোকানে আনছে না। ঈদের পর নতুন চাল বাজারে এলে দাম কমার আশা তাদের।
বাজারে গরুর মাংস আর এক দফা বেড়েছে। এক মাসে আগে যেখানে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ মাংস এখন ৭৮০ থেকে বাজার ভেদে ৮০০ টাকা। ছাগলের মাংসও কিছুটা বেড়েছে। খাসির মাংস ১১০০ টাকা, ছাগির মাংস মাংস ৯৫০ টাকা। ডিমের হালি ৪৪ টাকা, ডজন ১৩০ টাকা।
ক্রেতারা বলছেন, ঈদকে সামনে করে গরুর মাংসের দাম এক দফা বেড়েছে। মিরপুরের-২ নম্বরের ক্রেতা রাশেদুল হাসানের বক্তব্য, সব পণ্যেরই দাম বাড়ছে। গরুর মাংসের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে মনে হচ্ছে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষকে আর মাংস কিনে খেতে হবে না।
প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ২৪০ টাকা, লেয়ার ৩৪০ থেকে বাজার ভেদে ৩৫০ টাকা, কক মুরগি প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা।
বাজারে অন্যদিনের চেয়ে মাছ কম দেখা গেছে। এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা। রুই ও কাতল প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের রুই ও কাতল দাম ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা টাকা, এক কেজি ওজনের বোয়াল মাছের দাম ৬০০ টাকা। প্রতি কেজি বেলে মাছ ৪০০ টাকা, কোরাল ৬০০ টাকা, আইড় ৫৫০টাকা থেকে ৬০০ টাকা, চাষের টেংরা ৬০০ টাকা, নদীর টেংরা ৭০০ টাকা, চিতল ৪০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৬০০ টাকা, কালিবাউস ৪০০ টাকা, শিং ৩৫০ টাকা, মাগুর ৪৫০ টাকা, শোল ৩২০ টাকা, রূপচাঁদা ৯০০ টাকা, পুঁটি ৫০০ টাকা, কই ২৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুর-১৪ নম্বর ও তালতলা বাজারে দেখা গেছে শসার কেজি ৮০ টাকা। যেসব শসার সঙ্গে ফুলের অবশিষ্টাংশ রয়ে গেছে সেগুলোর প্রতি কেজি ১০০ টাকা। বেগুনের ধরনভেদে ৬০-৭০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, লতি ৬০-৭০ টাকা, সজনে ডাটা ৮০-১০০ টাকা, গাজর ৮০-১৪০ টাকা, ধুন্দুল ৮০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, উস্তা ১০০ টাকা, কাঁচা আম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কুমড়া ৩০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ধরন ভেদে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চাল কুমড়া ৬০ টাকা, লাউ ধরণ ভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলার দাম৩০ টাকা।
বাজারে নতুন করে সবজির দাম বাড়েনি। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব ধরনের সবজি।
ঈদের সময় সেমাই ও মসলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়ে যায়। ঈদ সামনে করে জিরার দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি ১০০ গ্রাম জিরা বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকায়, এখন বেড়ে ৭৫ টাকা। এলাচের কেজি দুই হাজার ৫০০ টাকা, দারুচিনি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪০০ টাকা।
এছাড়া প্রতি কেজি কালোজিরা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, জয়িত্রী ৩ হাজার ৬০০ টাকা, মৌরি ৩২০ টাকা, তেজপাতা ৯০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৬০০ টাকা, গোল মরিচ ৯০ টাকা, জয়ফল ১ হাজার ১০০ টাকা। খোলা লাচ্ছি সেমাই ২০০ টাকা কেজি। প্যাকেটজাত সেমাইয়ের দাম বেশি।
পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকা, আমদানি করা বড় প্রতি কেজি রসুনের ১৪০ টাকা, দেশি রসুনের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
জেডএ/জেএইচ