রাজশাহী: বছর ঘুরে আবারও এলো ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর খুশির সওগাত নিয়ে আবার হাজির হলো ঈদ।
সৌদি আরবে আজ ঈদ উদযাপন হচ্ছে। তাই মানুষ অনেকটা ধরেই নিয়েছেন যে, দেশে ঈদ হচ্ছে আগামীকাল শনিবার। চাঁদ দেখা ও ঘোষণার বিষয়টি কেবল আনুষ্ঠানিকতার। তাই শুক্রবার সকাল থেকেই চলছে বিকিকিনি।
আজ নগরের প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টেই বিশেষত আতর, টুপি ও সুরমার বাজার বসে। সেখাকার প্রতিটি দোকানের সামনেই তাই আজ ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেউ পরখ করে দেখছেন, আবার কেউ কিনছেন। আজ কারোরই যেন দম ফেলার ফুরসত নেই।
মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ এই ধর্মীয় উৎসবের আনন্দকে রাঙিয়ে তুলতে এরই মধ্যে বেশিরভাগ মানুষের নতুন পোশাক কেনা শেষ। ঈদের নামাজের পাঞ্জাবি এখন ঘরে উঠেছে। তাই এখন সবাই ভিড় জমাচ্ছেন নামাজের অন্যতম অনুষঙ্গ আতর, টুপি, সুরমা আর জায়নামাজের দোকানে। এর পাশাপাশি নামাজের জন্য তসবিহও কিনছেন অনেকে। ক্রেতার চাহিদাকে মাথায় রেখে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি পণ্য দিয়ে নিজেদের সম্ভার সাজিয়েছেন নগরের দোকানিরাও। সবাইকে স্বতন্ত্র পণ্যটি দিতে চাইছেন তারা।
রাজশাহী নগরীর বড় বড় বিপণিবিতান থেকে শুরু করে বিভিন্ন সড়কের পাশের ফুটপাতের দোকানে তাই এখন আতর-টুপি কেনার ভিড়। বিশেষ করে মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, আরডিএ মার্কেট ও নিউমার্কেটের বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে ঈদের নামাজের জন্য আতর, টুপি ও সুরমা। এবারের ঈদে নামাজের জন্য আকর্ষণীয় নকশার টুপির প্রতি ক্রেতাদের বেশি আকর্ষণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে নকশা ও কারুকার্যের মান ভালো হওয়ায় দেশি টুপির চেয়ে বিদেশি টুপি বেশি কিনছেন ক্রেতারা। তাই বাহারি সব ডিজাইনের রঙিন টুপির পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুটপাতের দোকানিরা।
রাজশাহীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টের ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ী সিকদার জরি হাউজ ও আতর হাউজের মালিক রকি সিকদার বলেন, দেশি গোল টুপি বিভিন্ন রকমের টুপি ১০০ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে তার দোকানে। এছাড়া গুজরাঠী টুপি পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। জর্ডানি টুপি ১৫০ টাকা, পাকিস্তানি টুপি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, নেপালি টুপি ২৫০ টাকা এবং সৌদি আরবের টুপি ৪০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।
নগরের রফিক আতর হাউজের স্বত্বাধিকারীরা মুহাম্মদ রফিকুল্লাহ বলেন, ঈদুল ফিতরের প্রথম আকর্ষণ হচ্ছে ঈদের নামাজ। আর ঈদের নামাজে অংশ নেওয়ার জন্য প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে সুগন্ধি আতর। আতর ব্যবহার করা সুন্নত। এর মধ্যে দিয়ে একটি সুন্নত আদায় হয় আবার মন মাতানো সুরভিতে ঈদের দিন চারপাশটা ফুরফুরে হয়ে ওঠে। আর দাম সাধ্যের মধ্যে থাকায় ধনী-গরিব সবাই কিনতে পারেন। তাই সব কেনাকাটার শেষে ভিড় বাড়ে আতরের দোকানে।
দাম জানতে চাইলে রফিকুল্লাহ জানান, এবার দেশি আতরের মধ্যে ক্রেতাদের পছন্দের প্রথমেই রয়েছে মদিনা এবং তিব্বত আতর। তারপর চন্দন, ফেরদৌস, রাজ দরবার, শাহী দরবার। এগুলো সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। সৌদি এবং দুবাইয়ের আতর সিফাত, সাফিনা, লামহা, রওজ, ব্লুমুন, মুকাম্মাল, মারওয়া, জমজম, আরফে জোহরা এবং মুকাদ্দাস পাওয়া যাচ্ছে ১০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেই। তার দোকানে এক সঙ্গে আতর, টুপি ও সুরমার প্যাকেজও রয়েছে। কেউ চাইলে মাত্র ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে পুরো এই প্যাকেজ নিতে পারেছেন।
আজ চাঁদ দেখা গেলে সারারাতই বাজার খোলা থাকবে বলেও জানান এই ব্যবসায়ী।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৩
এসএস/এএটি