ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সংকটে বাসাবাড়িতে কমিয়ে শিল্প কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ দিতে হবে: এফবিসিসিআই সভাপতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
সংকটে বাসাবাড়িতে কমিয়ে শিল্প কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ দিতে হবে: এফবিসিসিআই সভাপতি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সিআইপি (শিল্প) ২০২১ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি । ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট হলে বাসাবাড়িতে কমিয়ে তা শিল্প কারখানায় দেওয়ার কথা বলেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেছেন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ যখন নিরবচ্ছিন্ন ছিল, তখন সবচেয়ে বেশি শিল্প কারখানা হয়েছে।

এখন যদি আমাদের এগুলো সরবরাহে সমস্যা হয়, তাহলে বাসাবাড়িতে কমিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে সরবরাহ করতে হবে। কারণ কষ্ট কাউকে না কাউকে করতেই হবে। সেই কষ্ট যদি ইন্ডাস্ট্রি পায়, তাহলে শিল্প কারখানা হবে না, কর্মসংস্থান হবে না। আমাদের এই বিষয়গুলো চিন্তা করতে হবে।

সোমবার (২২ মে) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সিআইপি (শিল্প) ২০২১ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের সামনে অনেক সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে আমাদের যে লক্ষ্য রয়েছে, তা অর্জন করতে হলে আমাদের কিছু স্ট্রাকচারাল পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য আমাদের এনবিআরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, এক সময় আমাদের সক্ষমতা অনেক ছিল, এখন আমাদের সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। যেমন- আমাদের গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম কম ছিল। এখন আমাদের গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে গেছে। তাহলে আমাদের কাছে তুলনা করার মতো আছে কী?

তিনি আরও বলেন, আমাদের হালকা প্রকৌশলে ৬০ শতাংশ অদক্ষ লোকজন। কৃষি খাতে আমাদের ৪২ শতাংশ অদক্ষ লোকজন। আমাদের দক্ষতা উন্নয়ন খুবই জরুরি। এই জায়গায় আমাদের গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আমাদের দক্ষতা, সক্ষমতা, উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মানুষের দক্ষতা উন্নয়নে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানসহ অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান কাজ করে। সরকারের একটি বিশাল ফান্ডও এ জন্য দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা হলো, সেগুলো কী, তা আমরা জানি না। এ বিষয়ে কোনো সমন্বয় নেই। এ জায়গায় আমাদের সিরিয়াসলি কাজ করা দরকার।

দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে কিছু নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, এই জায়গায় আমাদের কাজ করা দরকার। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য সংগ্রহ, এগুলোকে সম্পদে পরিণত করে আবার ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরিয়ে নেওয়া দরকার। কিন্তু আমাদের বর্জ্য নেওয়ার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এই ভ্যাট তুলে দিলে বর্জ্য সংগ্রহ বেশি হবে এবং ইন্ডাস্ট্রিতেও এটি ব্যবহৃত হবে।

তিনি আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে যখন মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেল, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে, তখন আমাদেরও সমস্যা হয়েছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার সোর্স হচ্ছে এক্সপোর্ট এবং রেমিট্যান্স। আমাদের এক্সপোর্ট গত মাস ও এ মাসে নিম্নমুখী এবং আগামী মাসেও নিম্নমুখী হবে। আমাদের রেমিট্যান্স বাড়ছে, কিন্তু যেভাবে বাড়া দরকার, সেভাবে বাড়েনি।

তিনি বলেন, দেশের রপ্তানির ৮৫ শতাংশ আসে পোশাক খাত থেকে। বাকি খাত থেকে আসে মাত্র ১৫ শতাংশ। বাকি খাতগুলোতে কেন রপ্তানি বাড়ছে না সেদিকে সরকারের নজর দিতে হবে। তাহলে আমাদের যেসব লক্ষ্য রয়েছে, সেগুলো অর্জন করা সম্ভব।

শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুর হোসেন।

অনুষ্ঠানে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় স্বীকৃতিস্বরূপ ছয়টি ক্যাটাগরিতে ৪৪ জনকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি (শিল্প) ২০২১ সম্মাননা দেওয়া হয়। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক তাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সিআইপি কার্ড তুলে দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩ 
এসসি/আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।