ঢাকা: শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, আন্তর্জাতিক নীতিমালা মেনেই জাহাজ শিল্প এগিয়ে চলেছে। পাশাপাশি শিল্প মন্ত্রণালয় এ শিল্পের দেখভাল করে আসছে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) পঞ্চম আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সামিট ও এক্সপো- ২০২৩ এবং দ্বাদশ বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এক্সপো অ্যান্ড ডায়ালগ ২০২৩ এ 'জাহাজ নির্মাণ, ব্রেকিং এবং গ্রিন শিপ রিসাইক্লিং' শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সহযোগিতায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী এ এক্সপোর আয়োজন করেছে এক্সপোনেট।
সেমিনারে শিল্পমন্ত্রী বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন যে, জাহাজ শিল্প কাদের অধীনে? এটি একটি শিল্প এবং এটি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে। আমরা এটির দেখভাল করি এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালা মেনেই সেইফটি কোডসহ এ শিল্প এগিয়ে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের জাহাজ কোম্পানিগুলো এখন বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করেছে। বিশেষ করে আমাদের শিপইয়ার্ডগুলোতে নিজেরাই নিজেদের প্রয়োজন মেটাচ্ছি। সীতাকুন্ডে আমাদের যে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড আছে তারাও আন্তর্জাতিক মানের কাজ করছে। আমাদের দেশের অনেকে বিদেশে উচ্চ দক্ষতা নিয়ে কাজ করছে। তাদের সেই যোগ্যতা আছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি জাপান, নেদারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডের জাহাজ মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা আমাদের দেশ সফর করে গেছেন। তারা আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা আমাদের কাজ এবং প্রস্তুতি নিয়ে অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা এখানে কাজ করার জন্য আগ্রহী। তারা বিভিন্নভাবে এখানে বিনিয়োগ করবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ব্যবসা বান্ধব সরকার। এ যে নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হলো ব্যবসার জন্য, আমরা এটিকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাব। মানসম্মত সার্ভিস দেবে। যাতে আমাদের বেকারত্ব দূর হয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শাজাহান খান বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের নৌ পরিবহন এবং শিল্পখাতে অসাধারণ পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর যেখানে দুইটি বন্দর ছিল, সেখানে এখন চারটি বন্দর। আমরা আরও কাজ করছি যেন মেরিটাইম খাতে আরও উন্নতি করা যায়।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে চলেছে এবং বিশ্বে এক বিস্ময়। এজন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের অবদান কোনো অংশেই কম নয়। আমি এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার সময় নতুন বন্দর তৈরির ধারা শুরু করেছিলাম। যার ফলশ্রুতিতে পায়রা বন্দরে এখন ১০ দশমিক ৫ মিটারের জাহাজ চলাচল করছে এবং মাতারবাড়ি বন্দর বড় বড় জাহাজ নোঙরের জন্য উপযোগী হচ্ছে। তবে এ উন্নতি অনেকের গাত্রদাহে পরিণত হয়েছে। তাই এ উন্নতি অব্যাহত রাখতে হলে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।
সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন আনন্দ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক নেভাল আর্কিটেক্ট অ্যান্ড মেরিন (বুয়েট) ড. তরিকুল ইসলাম ও কবির গ্রুপের সুবিধা সমন্বয়কারী নেভাল আর্কিটেক্ট (বুয়েট) মো. আল আমিন।
আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (জাহাজ পুনর্ব্যবহারযোগ্য, প্রাইভেট সেক্টর ও বিআইএম) মো. মমিনুর রশীদ।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এ এক্সপো চলবে শনিবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
প্রদর্শনীতে জাহাজ নির্মাতা-ডকইয়ার্ড ও শিপইয়ার্ড, জাহাজ মালিক ও শিপ এজেন্ট, শিপ রিসাইক্লিং, নকশা প্রণয়নকারী, বন্দর অপারেটর, সিঅ্যান্ডএফ, মেরিটাইম একাডেমি, নাবিক নিয়োগকারী সংস্থা, লঞ্চ ও কোস্টালশিপ, নেভিগেশন ও মেরিন ইকুইপমেন্ট, আমদানি ও রপ্তানিকারক সহ-প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সাইফ পাওয়ারটেক গ্রুপ, খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড, ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড, চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেড, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, চট্টগ্রাম ও রংপুর, আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড শিপওয়েজ লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব লজিস্টিকস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট (সিআইএলটি), বাংলাদেশ ফ্রেট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন, গ্রুপ নটকা ও ঢাকা ওয়াসা ছয়টি দেশের প্রায় ৭৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
এসসি/জেএইচ