ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শুল্ককর বাড়ানোয় বাংলাবান্ধা বন্দরে পাথর আমদানি বন্ধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২৩
শুল্ককর বাড়ানোয় বাংলাবান্ধা বন্দরে পাথর আমদানি বন্ধ

পঞ্চগড়: সরকারিভাবে স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ পাথর আমদানিতে শুল্ককর বাড়ানোয় গত আটদিন ধরে দেশের সড়ক পথের একমাত্র চার দেশীয় স্থলবন্দর পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা বন্দর দিয়ে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা।

গত মঙ্গলবার থেকে আজ মঙ্গলবার (১ থেকে ৮ আগস্ট) পর্যন্ত এই স্থবিরতা দেখা দিয়েছে পুরো বন্দর এলাকা জুড়ে।

পাথর প্রবেশ না করায় বর্তমানে স্থলবন্দর ইয়ার্ডেও সুনসান নিরবতা বিরাজ করছে।

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, বাংলাদেশ স্থলবন্দর শুল্ক বিভাগ পাথর আমদানিতে শুল্ককর বাড়ানোয় পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছে বন্দরের ব্যবসায়ীরা। এই বন্দরটি পাথর নির্ভরশীল হওয়ায় গত আটদিন ধরে কর্মহীন অবস্থায় দিনযাপন করছে ব্যবসায়ী ও কয়েক হাজার শ্রমিক।

আরও জানা যায়, বাড়তি শুল্ককর প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য আমদানি থেকে পিছু হটেছে ব্যবসায়ী ও সিএন্ডএফ সদস্যরা।

পাথর ব্যবসায়ী রাজু বাংলানিউজকে বলেন, সরকারিভাবে রাজস্ব ফি বাড়ানোর কারণে পাথর আমদানিতে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তাই এই লোকসান মেনে নিতে না পেরে পাথর আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা গত আটদিন ধরে বন্ধ রেখেছে বন্দরের পাথর আমদানি।  

হাফিজুর রহমান নামে আরেক ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, ভারত ও ভুটানের মাঝে স্লট বুকিং ফি বাবদ চলা দ্বন্দ্বে পাথর আমদানি প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ ছিল। গত মাসের শেষের দিকে ভারত থেকে আমদানি শুরু হয়। এরই মাঝে শুল্ককর বাড়ানোয় আবারো প্রতিবন্ধকতার শিকার হয় গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরটি।

স্থলবন্দরের পাথর ব্যবসায়ী ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা জানান, বাংলাদেশ কাস্টমস বিদেশি পণ্য আমদানির ক্ষেতে প্রতি টনে ১৩ ডলার নির্ধারণ করায় ব্যবসায়ীদের আগের তুলনায় ৫০ টাকা হারে বেশি রাজস্ব দিতে হবে। এই হারে রাজস্ব বাড়ার কারণে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুণতে হবে। ফলে ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক হার প্রত্যাহারের দাবিতে ব্যবসা বন্ধ রেখেছেন।

নতুন নতুন সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় বন্দরটির প্রতি নজর দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শ্রমিকদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষাসহ বন্দরটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শ্রমিক নেতারা।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের শ্রমিক নেতা ইদ্রিস আলী বাংলানিউজকে বলেন, বন্দরটিতে দিন দিন নতুন নতুন সমস্যায় বিপাকে পড়েছে আমাদের শ্রমিকরা। তারা এই বন্দরে কাজ করে দিন অতিবাহিত করে। যদি সমস্যা দ্রুত সমাধান না হয় তবে শ্রমিকদের বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা ইমরুল হোসেন পাটওয়ারী বাংলানিউজকে বলেন, আগে আমদানিতে টনপ্রতি ১২ ডলার অ্যাসেসমেন্ট গ্রহণ করা হলেও, নতুন করে সরকারি নির্দেশে গত ১ আগস্ট থেকে পার টনে ভেলু ১ ডলার বৃদ্ধি করে ১৩ ডলার করা হয়েছে। এতে করে ভ্যাটের পরিমাণ বেড়ে ৪১ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি রফতানি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কুদরত-ই খুদা মিলন বাংলানিউজকে বলেন, গত ১ আগস্ট থেকে শুল্ক বিভাগ অ্যাসেসমেন্ট কর ১ ডলার বাড়ানোর কারণে ব্যবসায়ীরা পাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন। শুধু বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর না, একই অবস্থা শুরু হয়েছে অন্যান্য স্থলবন্দরেও। আমরা সব বন্দর সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতাদের নিয়ে এ বিষয়ে শুল্ক বিভাগের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করবো।

বাংলাবান্ধা ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, এই বন্দরটি পাথর নির্ভরশীল হওয়ায় সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় করছে। তবে চলমান সমস্যায় চলতি অর্থবছরের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা থেকে পিছিয়ে পড়ছে সরকার। আশাকরি দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।