ঢাকা: স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আরো সফল স্টার্টআপ দরকার। এজন্য দেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতির ব্যাপকভাবে প্রসার ঘটাতে হবে।
গত শনিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে অনুষ্ঠিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশের অ্যাকসেলারেটর নিউ কোহর্ট ইনডাকশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে বক্তারা এসব কথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান, ইনোভেশন অ্যান্ড কমার্শিয়ালাইজেশন স্পেশালিস্ট এ এন এম সফিকুল ইসলাম, আই সোশ্যালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনন্য রায়হান, এনডিই ইনফ্রাটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাকসুদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্টার্টআপদের আইডিয়াকে বিকশিত করতে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের (ডিড) অধীনে শুরু হয়েছে স্মার্ট বাংলাদেশ অ্যাকসেলারেটর কার্যক্রম। এর অধীনে তিন হাজার শিক্ষার্থীর আইডিয়া বিকাশের মাধ্যমে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। উদ্যোক্তা হতে আগ্রহীদের আইডিয়া থেকে তা কমার্শিয়ালাইজেশন পর্যন্ত ধাপে ধাপে প্রি-সিড, সিড ফান্ড, কোম্পানি গঠন, আইপি রেজিস্ট্রেশন, মেন্টরিংসহ বিপণন সহায়তা দেওয়া হবে।
নতুন এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে স্টার্টআপগুলোকে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনার জন্য বিজনেস মডেল তৈরি বা পরিমার্জিত করতে প্রশিক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তাসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সংযোগ প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করা হবে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠিত স্টার্টআপের ক্ষেত্রে করপোরেট অংশীদারির মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি এবং গ্রাহক পর্যায়ে উদ্যোগটি প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত ২৯ জুলাই স্মার্ট বাংলাদেশ অ্যাকসেলারেটর প্রোগ্রামের উদ্বোধন করেছিলেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে স্টার্টআপদের নিজেদের পাশাপাশি অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেশের অর্থনীতিতে আরো অবদান রাখতে হবে।
তিনি জানান, দেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতির বিকাশে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপন করা হয়েছে। আরো সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব স্থাপনের কাজ চলছে। এসব হাবে থাকছে শিক্ষার্থীদের আইডিয়াকে স্টার্টআপে রূপান্তরের নানা সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয় ইনোভেশন হাবগুলো উদ্ভাবন সংস্কৃতির চর্চা, উদ্যোক্তামূলক মানসিকতার বিকাশ, সহযোগিতামূলক পরিবেশের প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করছে।
এ এন এম সফিকুল ইসলাম বলেন, একটি স্টার্টআপকে ছোট থেকে বড় করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রশিক্ষণ, মেন্টরশিপ, বিভিন্ন ধাপে ফান্ডিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে প্রকৃতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই রয়েছে মেধাবী তরুণদের পদচারণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল, যা মানবকল্যাণে ব্যবহৃত হতে পারে, সেই সব ফলাফলের ভিত্তিতে ছাত্রদের উদ্ভাবন সমাজের নানা সমস্যা সমাধানে আইডিয়া বিকাশের মাধ্যমে গড়ে তোলা হবে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান।
অনন্য রায়হান বলেন, নতুন উদ্যোক্তার পথচলা সহজ নয়। কেউ সফল হন, আবার কেউ হারিয়ে যান। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শপআপ, চালডাল, পাঠাওয়ের মতো হাজারো বড় স্টার্টআপ প্রয়োজন। সরকার স্টার্টআপদের বিকাশে ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্প, স্টার্টআপ বাংলাদেশ, আইডিয়ার মতো বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগ দেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতির বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।
মাকসুদুল ইসলাম বলেন, স্টার্টআপদের স্বপ্ন পূরণে তাঁদের কোলাবরেশনের জন্য পার্টনার থাকতে হবে। স্টার্টআপদের ইনভেস্টরের ডাটাবেইস থাকতে হবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে নিজের আইডিয়া তুলে ধরতে হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্প এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন আনতে এবং সেগুলো বাণিজ্যিকীকরণের জ্ঞান শিক্ষার্থী, গবেষক ও শিক্ষকদের কাছে স্থানান্তরিত হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ অ্যাকসেলারেট ২৫টি স্টার্টআপের সমন্বয়ে একটি নতুন ব্যাচের কার্যক্রম শুরু করেছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পরিচালিত এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, কোহর্টের পর এ স্টার্টআপগুলো অ্যালামনাই গ্রোথ প্রগ্রামের অংশ হতে পারবে, যা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠাতা, পরামর্শদাতা এবং বিনিয়োগকারীদের স্থানীয় এবং বৈশ্বিক ইকোসিস্টেমে তাদের যুক্ত হতে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে ডিড প্রকল্পের ট্রেনিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট স্বাতী শারমিন এবং প্রকল্পের কনসালটিং ফার্মের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২৩
নিউজ ডেস্ক