ঢাকা: নতুন ঘোষণা হওয়া মজুরি কাঠামো অনুযায়ী তৈরি পোশাকের দাম পুনঃনির্ধারণের আহ্বান জানিয়ে এবার ব্র্যান্ড, রিটেইলার ও ক্রেতা প্রতিনিধিদের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সম্প্রতি বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এই চিঠি দেন।
চিঠিতে বলা হয়, কোভিড পরিস্থিতি ও পরবর্তী বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে ব্যবসায় এসেছে নানা বাধা। দেশে বিদ্যুৎ বিল বেড়েছে ২৫ শতাংশ। গ্যাসের দাম বেড়েছে ২৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ। ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৮ শতাংশ। সেই সঙ্গে ব্যাংক সুদের হারও বেড়েছে। এর মধ্যে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরি কাঠামো শুরু হবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তৈরি পোশাকের দাম পুনঃনির্ধারণের জন্য ক্রেতাদের কাছে বিজিএমইএ আহবান জানাচ্ছে।
চিঠিতে আরও জানানো হয়, অত্যাধুনিক মেশিনারিজ ও কর্মপরিবেশের উন্নয়ন ধারাবাহিকতা গার্মেন্টসগুলোতে বজায় রয়েছে। তাই পণ্যের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মদক্ষতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনে সবার সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পোশাক শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে গত এপ্রিলে ন্যূনতম মজুর বোর্ড গঠন করে সরকার। প্রথম ৬ মাসে তিন দফা বৈঠক করে তারা। তবে মালিক ও শ্রমিকপক্ষ থেকে মজুরি প্রস্তাব দেয়া হয়নি। এরপর, গত ২২ অক্টোবর এক বৈঠকে ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয় শ্রমিকপক্ষ। বিপরীতে ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব দেয় মালিকপক্ষ।
এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে পরদিন আন্দোলনে নামেন পোশাক শ্রমিকেরা। পরে গার্মেন্টস অধ্যুষিত এলাকা গাজীপুর, সাভার, আশুলিয়া ও মিরপুরে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এতে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসব ঘটনায় ৪ শ্রমিক নিহত হন।
পরে আন্দোলন তীব্র হলে ১ নভেম্বর নতুন করে মজুরি প্রস্তাব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় মালিকপক্ষ। এরপর ৭ নভেম্বর সাড়ে ১২ হাজার টাকার প্রস্তাবনা দেয় তারা। একে চূড়ান্ত করে ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর খসড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠায় নিম্নতম মজুরি বোর্ড। তবু আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন শ্রমিকেরা। পরিপ্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ করেন মালিকেরা। বন্ধ করা হয় সব ধরণের নিয়োগও। পরে, ধীরে-ধীরে সব কারখানা খুলতে শুরু করলে কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২৩
এমকে/এমএম