ঢাকা: রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বাজুস ফেয়ারের শেষ দিন শনিবার। প্রথম দুই দিনের মতো শেষ দিনেও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়ে জমজমাট জুয়েলারি শিল্পের এই মেলা।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিন সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বাজুস ফেয়ার ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে বাজুস ফেয়ারে ঘুরতে এসেছেন অনেকে। তারা মেলার বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে পছন্দের জুয়েলারি পণ্য দেখছেন ও কিনছেন।
মেলায় অংশগ্রহণকারী জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, গত দুই দিনের মতোই ক্রেতা-দর্শণার্থীদের পদচারণায় মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণ। গত দুই দিনের তুলনায় শেষ দিন বিক্রিও বেড়েছে।
ভেনাস জুয়েলার্স লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার রিপন কুমার দাস বাংলানিউজকে বলেন, তিন বছর ধরে এই মেলা হচ্ছে, আমরাও প্রতিবার অংশ নিচ্ছি। গত দুই বছর শেষ দিনে মেলায় দর্শনার্থীর ভিড় বাড়লেও এবার প্রথম দিন থেকে ব্যাপক চাপ ছিল। এমনকি গতকাল আমরা আমাদের প্যাভিলিয়নে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জায়গা পর্যন্ত দিতে পারিনি। অনেকে মন খারাপ করে চলে গেছেন। আজকে সকাল থেকেও দর্শনার্থীদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। বিকেলের পর এটি আরও বাড়বে।
আলভী জুয়েলার্সের সেলস এক্সিকিউটিভ আল-আমিন বলেন, আজকে দর্শনার্থীর থেকে ক্রেতা বেশি। যেহেতু আজ মেলার শেষ দিন। তাই যারা গত দুই দিন পছন্দ করে গেছেন, তারা আজ কিনতে আসছেন। গতকাল সন্ধ্যায় দর্শনার্থীদের অনেক চাপ ছিল। মেলায় পা রাখার জায়গা ছিল না। আজকে সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থী আছে। বিকেলে বা সন্ধ্যায় গতকালের মতো ভিড় হবে মনে হচ্ছে। এবার মেলায় আশানুরূপ বিক্রি হয়েছে।
বাজুস মেলায় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের অফার দিচ্ছে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো। স্বর্ণের গহনা কিনলে মজুরির ওপর দেওয়া হচ্ছে আকর্ষণীয় ছাড়। ডায়মন্ডের গহনাতেও দেওয়া হচ্ছে ছাড়। এ ছাড়া গিফট ভাউচার, র্যাফেল ড্র ও গেম খেলে পুরস্কার জিতে নেওয়ার সুযোগ থাকছে ক্রেতা দর্শনার্থীদের জন্য। এক প্ল্যাটফর্মে অনেকগুলো জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নতুন ডিজাইন ও হরেক রকমের জুয়েলারি পাওয়ায় খুশি ক্রেতারাও।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে পরিবারে সাথে বাজুস মেলায় এসেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ আক্তার জ্যোতি। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সামনে আমার বড় বোনের বিয়ে। বিভিন্ন দোকানে এর আগে জুয়েলারি দেখা হয়েছে। তবে বেশির ভাগই পুরনো ডিজাইন। তাই এখানে এলাম। এখানে অনেক ধরনের নতুন নতুন ডিজাইন পাওয়া যাচ্ছে। আবার একই জায়গায় অনেকগুলো দোকানও দেখা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৪৩ লাখ টাকার গহনা কিনেছি। আরও কিনব। বোনের বিয়ে বলে কথা।
নারায়ণগঞ্জ থেকে একা বাজুস ফেয়ারে এসেছেন শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ। তিনি মূলত মেলা ঘুরতেই এসেছেন। তানভীর বলেন, গত বছরও বাজুস ফেয়ারে এসেছি। এখানে এত গহনা থাকে যে, দেখতেই ভালো লাগে। স্বর্ণের অনেক ইউনিক জিনিসও দেখতে পাওয়া যায়। গেইম খেলা যায়।
গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে আইসিসিবিতে ‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হয় তিন দিনের বাজুস ফেয়ার ২০২৪। মেলার উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর। বিশ্ববাজারে দেশের স্বর্ণশিল্পীদের হাতে গড়া অলঙ্কারের পরিচিতি বাড়াতে এই মেলার আয়োজন করা হয়।
এবার বাজুস ফেয়ারে নয়টি প্যাভিলিয়ন, ১৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ১৫টি স্টলে দেশের স্বনামধন্য ৪১টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪
এসসি/এমজেএফ