ঝিনাইদহ: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, দেশে দুধ আছে কিন্তু ভাণ্ডার নেই। এবার আমরা ক্যাটেল হাব তৈরির মাধ্যমে দুধের ভাণ্ডার গড়ে তুলব।
তিনি বলেন, সরাসরি খামারিদের কাছ থেকে যাতে টাটকা দুধ মানুষ কিনতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হবে। গরু আমদানি করা হবে উন্নত বাজার বাড়ানোর জন্য, মাংসের জন্য নয়।
তিনি শৈলকুপাসহ জেলার খামারিদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার একটি সুস্থ ও মানবিক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। সমাজে কোনো বৈষম্য থাকবে না- এমন পরিকল্পনা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত মৎস্যজীবীদের কাছে ইজারা দিতে হবে। মৎস্যজীবীদের হাতে বাওড়ের ইজারা দেওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, তিন মন্ত্রণালয় ইজারা ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছে। আশা করা যায়, দ্রুতই এর সমাধান হবে।
তিনি কৃষকদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করে বলেন, এসব জমিতে ধানসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হরিহরা স্কুল মাঠে প্রান্তিক খামারিদের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিবাদ মুক্ত। গত বছরের এসময়ও আমরা ভাবতে পারিনি যে প্রাণ খুলে কথা বলতে পারব, প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ করতে পারব। কারণ সমাবেশ করলেই পুলিশ দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলেও এখনো তাদের দোসররা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তরিকুল ইসলাম তুরকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার আহমেদ মারুফ।
বক্তব্য দেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি গ্যাব্রিয়েল পিনেদাছ, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, এলডিডিপির প্রকল্প পরিচালক ড. মো. জসিম উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. আমিনুল হক, তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ফরিদুল ইসলাম, তানজির আলম রবিন, শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস, শৈলকূপা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন বাবর ফিরোজ, শৈলকূপা সম্মিলিত খামারি পরিষদের সদস্য সচিব ওসমান আলী।
অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহাম্মেদ মারুফ বলেন, বাংলাদেশের দরিদ্র খামারিদের জন্য উন্নত জাতের শাহী ওয়াল গাভীর পাশাপাশি ভেড়া ও ছাগল দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এতে বাংলাদেশের খামারিদের জীবনমান আরও সমৃদ্ধ হবে।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আপনাদের মতো জনগণ দ্বারা পরিচালিত হয় এবং আপনারাই দেশ দুটির চালিকাশক্তি। সবচেয়ে মজার বিষয়, আপনারা যে সমস্যায় ভোগেন, পাকিস্তানের নাগরিকরাও ঠিক সেই সমস্যায় ভোগেন। তবে পাকিস্তান মাংস ও দুধ উৎপাদনে বেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের হতদরিদ্র খামারিদের জন্য উন্নত জাতের গবাদি পশু দিতে প্রস্তুত রয়েছে পাকিস্তান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দ্রুত একটি প্রস্তাবনা আশা করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে একটি প্রস্তাবনা ইসলামাবাদে পাঠানো হলে বাংলাদেশি জনগণের জন্য উন্নত জাতের গবাদিপশু দ্রুত পাঠানো সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
এসআই