ঢাকা, বুধবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রতি শলাকা সিগারেটের দাম ন্যূনতম ৯ টাকা করার দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫
প্রতি শলাকা সিগারেটের দাম ন্যূনতম ৯ টাকা করার দাবি সেমিনারে অর্থনীতিবিদসহ অন্যরা।

ঢাকা: জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এক শলাকা সিগারেটের দাম ন্যূনতম নয় টাকা ধার্য করতে হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বাংলামটর এলাকায় বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্রের ভবনে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপ’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এ দাবি করেন।

সেমিনারে বলা হয়, সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে সিগারেটের দাম অল্প করে বাড়ানো হলেও অন্য নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির তুলনায় তা নগণ্য। তাই সিগারেটের সহজলভ্যতা বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের মাঝামাঝি এসে সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো হয়েছে। এই দাম বাড়ানোর পরও সবচেয়ে সস্তা সিগারেটের একটি শলাকা ছয় টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সিগারেটের সহজলভ্যতা কমাতে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এক শলাকা সিগারেটের দাম ন্যূনতম নয় টাকা ধার্য করতে হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে এ সেমিনারে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।  

তিনি বলেন, সিগারেটসহ অন্যান্য তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপ করতে না পারায় সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে একদিকে সরকার বিপুল রাজস্ব আহরণের সুযোগ হারিয়েছে, অন্যদিকে নিম্নআয়শ্রেণির নাগরিক এবং কিশোর-তরুণদের কাছে সিগারেটের সহজলভ্যতাও কমানো সম্ভব হয়নি।

সেমিনারে মূল নিবন্ধ উপস্থাপনায় উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী বলেন, চলতি অর্থবছরের অর্ধেক অতিক্রান্ত হওয়ার পর সিগারেটের দাম গড়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, যা প্রশংসনীয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অর্থবছরের শুরুতেই সিগারেটের দাম এই মাত্রায় বাড়ালে আরও বেশি সুফল পাওয়া যেত।

বর্তমানে বাজারে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ, ও অতি উচ্চ এই চার স্তরের সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। আসন্ন অর্থবছরে নিম্ন ও মধ্যম এই দুটি স্তরকে একীভূত করে একটি নতুন স্তর তৈরি করে মোট স্তরের সংখ্যা তিনটিতে নামিয়ে আনলে কর আহরণের দক্ষতা বাড়বে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল।

তিনি আরও বলেন, এই নতুন তিন স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার একেকটির দাম যথাক্রমে ৯০ টাকা, ১৪০ টাকা, ও ১৯০ টাকা ধার্য করার প্রস্তাব করেছে দেশের তামাকবিরোধী নাগরিক সংগঠনগুলো। এই প্রস্তাবনা আগামী বাজেটে প্রতিফলিত করা গেলে ২৪ লাখের বেশি নাগরিককে ধূমপান ত্যাগ করানো যাবে এবং দীর্ঘমেয়াদে ১৭ লাখের বেশি অকালমৃত্যুরোধ করা সম্ভব হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুজানা করিম বলেন, সিগারেটের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাজস্ব আহরণের চেয়ে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা দরকার। তামাকপণ্য বিক্রি থেকে যে রাজস্ব আসে, তা তামাকজনিত স্বাস্থ্য ব্যয়ের মাত্র ৭৫ শতাংশ।

সেমিনারে উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নেন নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধি, অর্থনীতিবিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫
আরকেআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।