ঢাকা, শুক্রবার, ৭ চৈত্র ১৪৩১, ২১ মার্চ ২০২৫, ২০ রমজান ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঈদ ঘিরে বরিশালের শপিংমলে জমে উঠছে বেচাকেনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০২ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৫
ঈদ ঘিরে বরিশালের শপিংমলে জমে উঠছে বেচাকেনা

বরিশাল: ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে বরিশালের বিপণিবিতানগুলোতে বেচাকেনা জমে উঠেছে। শুধু বরিশাল নগরই নয় বিভাগের বিভিন্ন জেলা শহরের মার্কেট ও দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়।

 

এতে সন্তোষ প্রকাশ করছেন বিক্রেতারা, তবে পোশাকের দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, ব্র্যান্ডের শো-রুমে ছোট বড় সবার পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।  দোকানে ভালো মানের পোশাকের দাম অনেক বেশি।

এ দিকে ছোট-বড় মার্কেট ও শপিংমলগুলোর ভেতরে পোশাকের সমাহার আর বাইরে রংবেরঙের বর্ণিল আলো। দেশি পোশাক ও বিদেশ থেকে আনা নতুন কালেকশন দিয়ে পসরা সাজিয়েছে ফ্যাশন হাউস ও মার্কেটগুলো।

মার্কেটগুলোতে ঈদ ঘিরে গৃহকর্তারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কেনাকাটায়। চলছে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাক। এ ছাড়াও জুতার দোকানগুলোতে দেখা গেছে ক্রেতাদের ভিড়। পোশাক তৈরির টেইলার্সগুলোতে ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও অনেক টেইলার্সে অর্ডার নেওয়া বন্ধ রয়েছে।  

সাবিহা নামে এক ক্রেতা বলেন, গত ২-৩ বছরে বরিশালে অনেক ব্র্যান্ডের পোশাকের শো-রুম হয়েছে। এসব শোরুমগুলোতে পোশাকের দাম আগে থেকেই নির্ধারণ করা থাকে। তবে এর বাইরে যে সব পোশাকের দোকান রয়েছে সেগুলো ঈদ কেন্দ্রিক জমে ওঠে। এসব দোকানে ঈদের সময় নতুন পোশাকের সমারোহ থাকে বলে ক্রেতারাও আগ্রহী থাকেন। তবে দোকানে কোয়ালিটি অনুযায়ী পোশাকের দাম এবার অনেক বেশি মনে হচ্ছে।  

বরিশালের বাজার ঘুরে জানা যায়, গত ১৫ মার্চ থেকেই ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য ও প্রবীণ সদস্যদেরও নিয়ে এসেছেন কেউ কেউ। এছাড়া পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা ও ঝালকাঠি জেলা শহরের মার্কেটগুলোর বিপণিবিতানগুলোতেও উল্লেখযোগ্য হারে ক্রেতাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এসব মার্কেটে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিনই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়ছে। ক্রেতাদের এমন ভিড়ে খুশি ব্যবসায়ীরা।  

এবারের ঈদে বাজারে নারীদের পোশাকের মধ্যে সব থেকে বেশি বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় অরগেনজা, মেঘা, চান্দ্রিয়া, জয়পুরী ও পাকিস্তানি সারারা গারারা। এছাড়াও চাহিদা রয়েছে কাতান, বাড়িস, কারচুপি, বালাহার, মটকা ও কাশ্মীর কাতান থ্রি পিসের।  

অপরদিকে শাড়ির মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে, বি প্লাস খাড্ডি বেনারসি, চেন্নাই সিল্ক, বুটিক, ক্রেসপি, মান্দানি ও জামদানি। ছেলেদের পাঞ্জাবি, টুপি এবং প্যান্টও বিক্রি হচ্ছে সমহারে। এ ছাড়া কসমেটিক্স পণ্যের চাহিদাও কম নয়।  

ঈদের কেনাকাটা করতে আসা এক ক্রেতা এইচ আর হীরা বলেন, এ বছর নগরে বেশ কয়েকটি দেশীয় ব্র্যান্ডের শোরুম চালু করা হয়েছে। এসব শোরুমগুলোতে বেশ ভালো পোশাকই দেখতে পেয়েছি যা মধ্যবিত্তদের হাতের নাগালে।

আরেক ক্রেতা শারমিন জামান বলেন, নগরের শোরুমগুলোতে এক সঙ্গে অনেক পোশাক পাওয়া যায়। এসব শোরুম ঘুরে পরিবার ও স্বজনদের জন্য কেনাকাটা করছি। রোজা রেখে সবার জন্য কেনাকাটা করতে একটু ক্লান্ত লাগলেও শান্তি আছে।

ওলিউল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, পোশাকের দর ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। আমি দুই সন্তানের জন্য পোশাক কিনতে এসেছি। স্ত্রীর জন্য এখনো কিনতে পারিনি।  

বিপণিবিতানের মালিকরা বলছেন, দাম নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে বাহাজ হওয়াটা স্বাভাবিক। আমরা বেশি দামে পোশাক সরবরাহ করলে বাজারে তার প্রভাব পড়বেই। তবে পোশাকের কোয়ালিটির ওপর দাম অনেকটা নির্ভর করে। বাজারে বর্তমানে কম দামের পোশাকও আছে, বেশি দামেরও আছে।  

নগরের চকবাজারের স্বদেশী বস্ত্রালয়ের মৃণাল কান্তি সাহা জানান, ক্রেতাদের নিত্য-নতুন ও বিভিন্ন ডিজাইনের দেশি-বিদেশি শাড়ির চাহিদা রয়েছে। আসা করি রমজানের শেষ সপ্তাহে বেচাকেনা আরও বাড়বে।

চকবাজার রোডের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আইনজীবী মনিরুল ইসলাম বলেন, নগরের ৯ নং ওয়ার্ডে ঈদে কেনাকাটার জন্য বেশির ভাগ জুতার দোকান ও গার্মেন্টস রয়েছে । তবে নগরীর চকবাজার, ছাড়াও ভেনাস মার্কেট, হেমায়েত উদ্দিন রোড, চৈতি মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। এছাড়া ক্রেতাদের ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সমিতি বিভিন্ন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৫
এমএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।