ঢাকা, রবিবার, ৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইসলামী ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে দুটি ব্যাংক করা হবে: গভর্নর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৫
ইসলামী ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে দুটি ব্যাংক করা হবে: গভর্নর বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ইসলামী ব্যাংকগুলোকে একদম নতুন রূপ দেওয়া হবে। একটি বড় ও অনেকগুলো ছোট ছোট ইসলামী ব্যাংক রয়েছে।

এর মধ্যে অনেকগুলো সমস্যাগ্রস্ত। এসব ব্যাংক একীভূত করে বড় দুটি ইসলামী ব্যাংক গড়ে তোলা হবে।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংকের জন্য আইন ও তদারকির ব্যবস্থা চালু করা হবে। এ জন্য বৈশ্বিক পরিসরের উত্তম রীতিনীতি অনুসরণ করে এসব করা হবে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এসব কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, ব্যাংক খাতের সংস্কার চলমান রাখতে রাজনৈতিক সমর্থন প্রয়োজন। রাজনীতির পালাবদল হলেও এসব সংস্কার চলতে হবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, যারা অর্থ পাচার করেছে, তাদের জীবন কঠিন করে ফেলা হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ অর্থ পাচার না করে। পাচার করা অর্থ উদ্ধারে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে কাজ চলছে। এ ক্ষেত্রে আইনি ও নৈতিক—উভয় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সহায়তা প্রয়োজন।

যেসব ব্যাংকে অনিয়ম হয়েছে, আমানতকারীদের স্বার্থে সেসব ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রথমে ১১টি ব্যাংক ও এরপর আরও দুই ব্যাংকে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আরও একটি ব্যাংক নিজেই পর্ষদে পরিবর্তন এনেছে। ব্যাংক কোম্পানি আইনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। কারা পর্ষদে আসবেন, স্বতন্ত্র পরিচালক কারা হবেন, তাঁদের যোগ্যতা নির্ধারণ করা হচ্ছে, যোগ করেন গভর্নর।

ব্যাংক খাতে সমস্যার পেছনে বাংলাদেশ ব্যাংকও একটি কারণ। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর বিভিন্ন চাপ থাকে, সেই সঙ্গে আছে ব্যাংক খাতে দ্বৈত শাসন আছে। স্বায়ত্তশাসন ও তদারকি বাড়াতে কাজ চলছে, যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর হয়ে ওঠে।

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ব্যাংক খাতে যেসব সমস্যা হচ্ছে বা হতে পারে, তা যেন আগেই জানা যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর দৈনন্দিন কাজে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা যাতে তাদের দায়িত্ব পালন করে, তা নিবিড়ভাবে তদারকি করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিপোর্টিং পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করা হবে। সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে জমা নেওয়া হবে।

গভর্নর বলেন, সমস্যাগ্রস্ত বেশিরভাগ ব্যাংক মূলধনের ঘাটতিতে আছে। এসব ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ। এসব ব্যাংক ঠিক করতে কয়েক বছর লেগে যাবে। রাজনীতির পালাবদলে এসব সংস্কারে সমর্থন লাগবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখতে হবে।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল হান্নান চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৫
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।