বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে। এখন মুক্তবাজার অর্থনীতির সময়।
চাইলেও বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি এড়াতে পারছে না। ফলে কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর বেসরকারি খাত হচ্ছে কর্মসংস্থানের মূল চালিকাশক্তি। কর্মসংস্থান না হলে বেকারের সংখ্যা বাড়বে।
বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া মানে জীবনমান নিম্নগামী হওয়া। মানুষের আয়-উন্নতি ব্যাহত হোক—এই পরিস্থিতি কাম্য নয়। অন্যদিকে শিল্পপণ্যের উৎপাদন বাড়ানো উচিত। মানুষের আয় কিন্তু সীমাবদ্ধ।
ফলে মানুষের ভোগব্যয় কমবে। সরকারের রাজস্ব আহরণ নিয়ন্ত্রিত হবে এবং সরকার বাজেট ঘাটতির সম্মুখীন হবে। বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার ঋণ নেবে। ঋণ নিলে মুদ্রাস্ফীতি হবে। মুদ্রাস্ফীতি হলে মানুষের ভোগব্যয় আরো কমে।
সরকারের রাজস্ব আরো কমবে। এভাবে একটি চক্রের মধ্যে পড়বে দেশ। ফলে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার যে স্বপ্ন, সেটা স্বপ্নই থেকে যাবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসে আগে অন্যায় ও অযৌক্তিক ব্যয় সমন্বয় হয়েছে। এসব বিষয়ে একটি কমিশন গঠন করা হোক। গত ১৫ বছরে এই খাতে কত অর্থ লুট করা হয়েছে, সেটা নির্ণয় করা দরকার। পাশাপাশি এখন বিদ্যুৎ-গ্যাসের যে বিদ্যমান মূল্য, সেটা কতটুকু কমিয়ে আনা যায় সেটাও ভাবতে হবে। এ ছাড়া সিস্টেম লস না কমিয়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়ানোটা অযৌক্তিক। এতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে শিল্প মালিকদের। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করা দরকার। তাহলে কিছুদিন পর পর দাম বাড়ানোর চাপ আর নিতে হবে না গ্রাহককে।
ক্যাব দেখিয়েছে, বিদ্যুৎ খাতে ৩৫-৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ কমানো যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় সাত টাকার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব। ভারত থেকে আমরা বিদ্যুৎ কিনছি সাত টাকা ৪০ পয়সায়। নিজেরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে আরো কমে উৎপাদন সম্ভব। বিভিন্ন সময় বিদ্যুতের দাম কমানোর উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। বিষয়টি বর্তমান সরকারকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
লেখক: জ্বালানি উপদেষ্টা, কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)