দিনাজপুর: সাদা-কালো ছিট যুক্ত দীর্ঘাকার এ গরুটির নাম ‘সম্রাট’। ৪০ মণ ওজনের সুঠাম দেহের অধিকারী এ গরুটি সাড়ে চার বছরেরও অধিক সময় ধরে লালন-পালন করেছেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার জোত সাতনালা গ্রামের খামারি আনিসুল হক।
বিশাল দেহের অধিকারী এ সম্রাটকে দেখতে আশপাশের ছাড়াও দূর-দূরান্তের লোকজন ভিড় করছেন প্রতিদিন। এত দানব আকৃতির গরুটি আগে দেখেনি বলে জানান তারা।
কথা হলে স্থানীয় বাসিন্দা জাকারিয়া ইসলাম বলেন, আমার নিজেরও ছোট একটি গরুর খামার আছে যেখানে ১৫টি গরু আছে। অনেক দিন থেকেই আমি গরু পালন করে আসছি। কখনো সম্রাটের মতো গরুকে বড় করতে পারিনি। দিনাজপুরের বিভিন্ন হাটবাজারে গরু কিনতে বা বিক্রি করতে যাই। কিন্তু এত বড় গরু আমি দেখিনি।
গরু দেখতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, এত বড় গরু পালন করা আমারও ইচ্ছে আছে। কিন্তু এটা অনেক যত্ন আর অর্থের ব্যাপার আছে। খামারি আনিসুল হক দীর্ঘদিন থেকেই এ গরুটিকে লালন পালন করে আসছেন। এ বছর দিনাজপুরের মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু বলে আমি বিশ্বাস করি। এত বড় গরু আগে কখনো দেখা হয়নি।
মোস্তাকুল ইসলাম নামে ওপর একজন বলেন, সম্রাটকে দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্তের লোকজন ভিড় করছে। আমাদের এলাকার নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এ গরুটির কারণে। এটা আমাদের কাছে অনেক ভালো লাগতেছে।
নিজ খামারের গাভীর ছোট্ট একটি বাছুর থেকে সম্রাট হয়ে ওঠার গল্প শোনাচ্ছিলেন খামারি আনিসুল হক। কথা হয় তার সঙ্গে।
তিনি বলেন, গরুটির বয়স চার বছর আট মাস। আমার খামারের গাভীর বাছুর হয়েছিল। বাছুরটি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তখন আমি এ গরু থেকে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। গরুটির চালচলন আর স্বভাবের কারণে আমার ছেলে ওর নাম রাখে সম্রাট। বর্তমানে সম্রাটের দৈর্ঘ্য নয় ফুট এবং উচ্চতা সাত ফুট। দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি সম্রাটের প্রতিদিন এক মণ করে কাঁচা ঘাস লাগে। ওর ওজন প্রায় ৪০ মণ। এবার গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রাথমিক দাম রাখছি ১৫ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, সম্রাটকে নিয়ে আরেকটি সমস্যার মধ্যে আছি। ওর আকার এত বড় যে গোয়াল ঘরের কোনো দরজা দিয়ে বাইরে বের করা সম্ভব নয়। এ কারণে সম্রাটকে গত দুই বছর ধরে ঘরের বাইরে বের করতে পারিনি। এবার বিক্রি হলে গোয়াল ঘরের দরজা কিংবা দেয়াল ভেঙে বের করতে হবে।
সম্রাটের বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, চিরিরবন্দর উপজেলার খামারি আনিসুল হক দীর্ঘদিন ধরে সম্রাট নামের গরুটিকে লালন পালন করে আসছেন। আমাদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনাসহ সার্বিক সহায়তা করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত এটিই দিনাজপুরের সবচেয়ে বড় গরু বলে আমরা মনে করছি।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, আসন্ন কোরবানি ঈদে দিনাজপুরে এবার ২ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৫টি গবাদিপশুর চাহিদা রয়েছে। আর জেলায় মোট কোরবানি যোগ্য গবাদিপশু রয়েছে ৪ লাখ ৫ হাজার ৯৯১টি।
জেএইচ/এএটি