ঢাকা: হবিগঞ্জ জেলার বিবিয়ানায় ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় মঙ্গলবার প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
জুলাই’২০১৩ থেকে জুন’২০১৬ মেয়াদে বিবিয়ানা পাওয়ার প্লান্টটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা। জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) প্রকল্প বাস্তবায়নে দুই হাজার ৩৬১ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করবে। প্রকল্প ব্যয়ের অবশিষ্টাংশ ৮৫৬ কোটি টাকা সরকারি তহবিল ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড থেকে আসবে ১৪১ কোটি টাকা।
প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করে পরিকল্পনা কমিশন বলেছে, “বিবিয়ানায় আবিষ্কৃত গ্যাসের কার্যকরী ব্যবহার, বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানো এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থার স্থায়িত্ব ও নির্ভরতা বৃদ্ধির জন্য প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে। ”
সভায় ‘বরিশাল বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ নামের অপর একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পের আওতায় বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর ৪০টি উপজেলায় ৫৪৪ কিমি সড়ক নির্মাণ, ৪৭৬৭ মিটার ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ ও ১৯ লাখ ঘনমিটার মাটির কাজ করা হবে।
এছাড়া, ২০টি হাটবাজার-গ্রোথ সেন্টার ও ২৬টি ঘাটের উন্নয়ন করা হবে। জুলাই’২০১৩ থেকে জুন’২০১৮ মেয়াদে ৬৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
বৃহত্তর ফরিদপুরের (ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ) উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ের সড়ক উন্নয়ন, এসব সড়কে ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ এবং গ্রোথ সেন্টার-হাটবাজার উন্নয়ন ও বোট ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণের লক্ষ্যে সভায় ‘বৃহত্তর ফরিদপুর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক দুটি প্রকল্প সংশোধিত আকারে অনুমোদন করা হয়েছে। এ দু’টি প্রকল্পের ব্যয় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ একনেকের অন্যান্য সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিবর্গ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ভূঁইয়া শফিকুল ইসলাম অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবগত করেন।
তিনি জানান, “সভায় মোট ৯টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এতে ৭ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ব্যয়ের মধ্যে ৪ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এবং অবশিষ্ট ২ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য থেকে মেটানো হবে। ”
সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন- এর কার্যক্রম সম্প্রসারণ শীর্ষক’ প্রকল্প যার মোট ব্যয়ভার ৫০ কোটি টাকার সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে।
‘পাট বিষয়ে মৌলিক ও ফলিত গবেষণা’ প্রকল্পের ১১৮ কোটি টাকাও সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে।
রেলপথ উন্নয়নে ‘ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয় একনেক সভায়। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকা।
সরকারি তহবিল থেকে ‘নাটোর সড়ক থেকে রাজশাহী বাইপাস রোড পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদিত হয়, এতে মোট ব্যয় হবে ৮৭ কোটি টাকা।
‘নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা সড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ’-এ ১৩১ কোটি টাকার প্রকল্পও অনুমোদন করা হয়। এ প্রকল্পের সম্পূর্ণ টাকাও সরকারি সহায়তা থেকে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২১ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৩
এমআইএস/ সম্পাদনা: এম জে ফেরদৌস, নিউজরুম এডিটর ও অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর- [email protected]