ঢাকা: হাজারীবাগ এলাকায় অবৈধ ও বিষাক্ত ফিড তৈরির কারখানা বন্ধে র্যাবের ‘বিশেষ অভিযান’ এর জোর দাবি জানিয়েছে পোল্ট্রি শিল্প সমন্বয় কমিটি (বিপিআইসিসি)।
শনিবার গুলশানে ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিআব) কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ দাবি জানান বিপিআইসিসি নেতারা।
অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ে হাজারীবাগে অবস্থিত বিষাক্ত ফিড তৈরির কারখানা ‘হাইপো ফিড’ এর বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং র্যাব-২ কে সাধুবাদ জানান পোল্ট্রি শিল্প নেতারা।
বিপিআইসিসি’র আহ্বায়ক মসিউর রহমান বলেন, হাজারীবাগের বিষাক্ত ফিড তৈরির কারখানা নিয়ে গণমাধ্যমে বারবার রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও খুব জোরালো অভিযান চোখে পড়ছে না।
তিনি বলেন, হাজারীবাগ এলাকায় যত্রতত্র ট্যানারির বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যায় অথচ এমনটি হওয়ার কথা নয়। সমস্যা নির্মূলে ট্যানারির মালিক, মন্ত্রণালয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
মসিউর রহমান আরও বলেন, ট্যানারির বর্জ্য ট্যানারিতেই ধ্বংস করতে হবে। কোনভাবেই তা এখানে সেখানে ফেলা বা অন্যের কাছে বিক্রি করা যাবে না। বিচ্ছিন্ন অভিযানে সাময়িক উপকার পাওয়া গেলেও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান আসছে না। শুধু হাজারীবাগ নয় বরং হাজারীবাগ থেকে শুরু করে গাবতলী বেড়িবাঁধ ও আশপাশের এলাকায় গড়ে ওঠা এ ধরনের সবগুলো কারখানা অবিলম্বে বন্ধের জন্য কঠোর সাঁড়াশি অভিযানের দাবি জানান মসিউর।
ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) সভাপতি ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার বলেন, দেশে উৎপাদিত মোট পোল্ট্রি ফিডের মাত্র শূন্য দশমিক দুই শতাংশেরও কম ফিডে ক্ষতিকারক উপাদান ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাকি প্রায় ৯৯.৮ ভাগ ফিডেই ট্যানারির বর্জ্য বা ক্ষতিকর উপাদান নেই। ভোক্তাদের আমরা নিরাপদ ডিম ও মুরগির মাংসের নিশ্চয়তা দিতে চাই। আর সে কারণেই সরকারের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিইএ) সাধারণ সম্পাদক এম এম খান বলেন, গবেষকরা ট্যানারির বর্জ্য মিশ্রিত ফিড মুরগিকে খাওয়ানোর পর তার প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করছেন। এটা খুবই স্বাভাবিক যে, ক্রোমিয়ামযুক্ত খাবার শুধু মুরগি কেন মানুষকে খাওয়ালেও প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে।
ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপসা-বিবি) সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হক বলেন, পোল্ট্রি’র ডিম এবং মুরগির মাংস সম্পূর্ণ নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য। অথচ একটি অসাধু চক্র মানুষের মাঝে ভীতির সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিআব) সম্পাদক খন্দকার মনসুর হোসেন বলেন, দেশে ফিডের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২২ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে প্রায় ২১ লাখ মে.টন ফিডই উৎপাদিত হয় অত্যাধুনিক বাণিজ্যিক ফিড মিলগুলোতে।
তিনি বলেন, ফিডের প্রতিটি উপকরণ ব্যবহারের আগে এবং তৈরির পর কোম্পানির নিজস্ব গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হয়। ফলে এতে ক্ষতিকর কিছু থাকার সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৪