ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কৃষি আদালতের বিকল্প নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৪
কৃষি আদালতের বিকল্প নেই ছবি: রহমত উল্যাহ/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশের কৃষককে রক্ষা ও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি আদালত গঠন এবং কৃষি ন্যায়পাল নিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
 
রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ছায়ানট বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের ৩০ বছর উদযাপনের সমাপনী অনুষ্ঠানের ত্রিমাক্ষিক মঞ্চে বক্তারা এ পরামর্শ দেন।


 
‘উন্নয়নে জনকেন্দ্রিক বিকল্পের সুযোগ ও ক্ষেত্র: দারিদ্র্য, অন্যায্যতা ও অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ৩০ বছরের লড়াই’ শীর্ষক ত্রিমাক্ষিক মঞ্চ অনুষ্ঠিত হয়।
 
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কৃষি মৈত্রীর সভাপতি মনির হোসেন বলেন, কৃষক কৃষি কাজে বিনিয়োগ করেও সুফল পান না। ব্যবসায়ীরা কৃষি উপকরণের মাধ্যমে কৃষককে শোষন করে বিত্তশালী হন। কৃষক পুঁজি হারিয়ে পরিচয়হীন হয়ে হয়ে যান মজুর।
 
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়লেও কিন্তু কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। ভূমিহীন, বর্গাচাষী কৃষকরা সরকারি ভর্তুকি ও ঋণ পান না।
 
মনির হোসেন বলেন, কৃষি আদালত করা দরকার। কৃষকরা যদি কোনোভাবে বাজার ব্যবস্থা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হন, তাহলে কৃষকদের জন্য কৃষি আদালত থাকতে হবে। কৃষকদের জন্য কৃষি ন্যায়পাল করা যেতে পারে। উৎপাদন বেড়ে গেলে ক্ষতির বোঝা কৃষককে কাঁধে নিতে হয়। শক্তিশালী কৃষি আদালত থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণ পেতেন।
 
তিনি আরও বলেন, সরকার কৃষকদের কৃষি কার্ড করলেও সব কৃষক পাননি। যে ভর্তুকি দেওয়া হয় তা ডিসেম্বরের মধ্যে কৃষকের অ্যাকাউন্ট পৌঁছে দিতে এবং জুনে মধ্যে সংগ্রহ করার আহবান জানান তিনি।
 
একই সঙ্গে বীজের প্যাকেটে ইংরেজিতে বর্ণনার পরিবর্তে বাংলায় লেখার বিষয়ে সংসদে তুলতে হবে। কৃষি গবেষণায় গবেষকদের সরাসরি কৃষকদের কাছে যেতে সহায়তা করতে সরকার ও ব্যবসায়ীদের আহবানও জানান তিনি।
 
জাতীয় পরিকল্পনা ও বাজেট সম্পর্কিত সংসদীয় ককাসের সহ সভাপতি সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, সরকারের মধ্যে কৃষকদের স্বার্থে ক্ষেত্রে সাংঘাতিক রকমের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।
 
রাষ্ট্র কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করছে না। অধিকন্তু মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর স্বার্থ রক্ষা করছে। রাষ্ট্রকেই কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।
 
বাদশা বলেন, কৃষিকে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলে তার ফলাফল হচ্ছে খাদ্য ঘাটতি। টাকা নিয়ে আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারে ঘুরতে হয়েছে। কিন্তু ঘাটতির সময়ে খাদ্য পাওয়া হয়নি।
 
তিনি বলেন, কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় রাষ্ট্রকে বিনিয়োগ করতে হবে। কৃষকের অধিকার রক্ষায় কৃষি আদালত প্রচলন ও কৃষি ন্যায়পাল করার সুপারিশও করেন তিনি।
 
তার অভিযোগ, কৃষি আদালত গঠনে কৃষিমন্ত্রী সংসদে নীতিগতভাবে মেনে নিলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। অর্থমন্ত্রী কৃষিবিমা চালুর বিষয় বললেও পদক্ষেপ নেই।
 
বাদশা আরও বলেন, কার্ডধারী কৃষককে সরাসরি বাজারে আসতে হবে। বাজারে আসলে ফরমালিনমুক্ত খাদ্যের পাশাপাশি স্বল্পমূল্যে পণ্য পাওয়া যাবে।
 
বাদশা বলেন, বাংলাদেশ থেকে আলু রফতানির সুযোগ রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা আইন করার পাশাপাশি কৃষিজমি রক্ষায় শক্তিশালী কৃষক সংগঠন গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
 
সংসদ সদস্য শিরীন আক্তার বলেন, আমাদের সকল ধরনের বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। সকল মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা ছাড়া খাদ্যের স্বংয়সম্পূর্ণতা দাবি করতে পারি না।
 
অ্যাকশনএইড, বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরের সঞ্চালনায় ত্রিপাক্ষিক মঞ্চে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ূন রশীদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বক্তব্য রাখেন।
 
** শিক্ষার ‘প্যাটার্নে’ আটকা উদ্যোক্তা

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।