ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অবলোপনকৃত ঋণের ৫৭ শতাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের

শাহেদ ইরশাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
অবলোপনকৃত ঋণের ৫৭ শতাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের

ঢাকা: দীর্ঘদিন ধরে অনাদায়ী থাকায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলো ৩৭ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অবলোপন করেছে ২১ হাজার ৩০ কোটি টাকা।

যা মোট অবলোপনকৃত ঋণের ৫৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের জুন মাসের শেষে ঋণ অবলোপনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষে ব্যাংকগুলো সর্বমোট ৩৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করে। এ বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৭ হাজার ২৫২ কোটি টাকা।

তিন মাসের ব্যবধানে অবলোপনকৃত ঋণ বেড়েছে ২৮১ কোটি টাকা। তবে বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় জুন মাসের শেষে ঋণ অবলোপন বেড়েছে ৩৯৩ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জুন মাসে ব্যাংকিং খাতে শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। যা গত ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা বেশি। ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা।

বছরের ছয় মাস শেষে (জানুয়ারি-জুন) রাষ্ট্রীয় মালিকানার পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক) অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৩০ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময় যা ছিল ১৫ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। তবে ওই বছরের হিসাবে বেসিক ব্যাংক বিশেষায়িত ব্যাংকের ক্যাটাগরিতে ছিল।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ঋণ অবলোপন রয়েছে ১৫ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। গত বছরে এই সময়ে যা ছিল ১২ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। বিদেশি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ৫০৬ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে। বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) ৫৫৫ কোটি ঋণ অবলোপন করেছে। গত বছর একই সময় বেসিক ব্যাংকসহ বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলো ৩ হাজার ৪১৮ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ঋণ বিতরণ করায় ব্যাংকখাতে মন্দ ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। এ কারণে বাধ্য হয়ে অবলোপন করায়, প্রতি বছর এর পরিমাণ বেড়ে চলেছে।

অনাদায়ী থাকা মন্দ বা ক্ষতিজনক পর্যায়ের খেলাপি ঋণ এক পর্যায়ে ব্যাংকের স্থিতিপত্র (ব্যালান্স সিট) থেকে বাদ দেওয়া হলেই তা অবলোপনের মধ্যে চলে যায়। ঋণ অবলোপনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০৩ সালে একটি নীতিমালাও তৈরি করে।

নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলো ৫ বছর ও তার বেশি সময় ধরে অনাদায়ী থাকা খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিত রেখে ওই ঋণ অবলোপন করা হয়। ওই ঋণের হিসাব ব্যাংকের মূল ব্যালান্স সিট থেকে আলাদাভাবে হিসাব করা হয়।

এসব ঋণ আদায়ের জন্য প্রতিটি ব্যাংকের আলাদা ইউনিট রয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণ আদায়ে মামলা করলে অনেক সময় ঋণের চেয়ে আদায় খরচ বেশি হয়। এজন্য ৫০ হাজার টাকা ঋণের বিপরীতে মামলা না করে অবলোপনের সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।