ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

স্বজনপ্রীতিতে ডুবেছে ৮টি দুগ্ধ খামার

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
স্বজনপ্রীতিতে ডুবেছে ৮টি দুগ্ধ খামার ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: স্বজনপ্রীতিতে ডুবেছে সরকারি ৮টি দুগ্ধ খামার। ভর্তুকি দিয়েও এসব খামারকে উৎপাদনশীল করতে ব্যর্থ হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।

এ অবস্থায় খামারগুলোকে টিকিয়ে রাখাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 
খামারে লোকসানের কারণ অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেই এসব তথ্য বের হয়ে এসেছে। তাই খামার টিকিয়ে রাখতে হলে ৮টি খামার পরিচালনা পর্ষদ ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
 
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ৮টি খামার হলো: সাভারের কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামার, সিলেটের জেলা দুগ্ধ খামার, রাজশাহীর রাজবাড়ীহাট দুগ্ধ ও গবাদি পশু উন্নয়ন খামার, ফরিদপুরের দুগ্ধ ও গবাদিজাত উন্নয়ন খামার, বাগেরহাটের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামার, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামার, বগুড়ার শেরপুরের দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামার এবং বরিশালের কাশিপুরের দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামার।
 
এর মধ্যে সিলেট জেলা দুগ্ধ খামারে ব্যয় দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬০ টাকা। বিনিময়ে বার্ষিক গাভীপ্রতি দুধ উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৪ লিটার করে।   বগুড়ার শেরপুরের দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামারের ব্যয় ৪ কোটি ৪৫০ লাখ টাকা, দুধ উৎপাদন গাভীপ্রতি ৩ দশমিক ৮৩ লিটার। বরিশালের কাশিপুরের দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামারের ব্যয় ১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, দুধ উৎপাদন ৬ দশমিক ৫ লিটার গাভীপ্রতি। বাগেরহাটের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের ব্যয় ১ কোটি ৬৪ লাখ ১৪৭ হাজার টাকা, দুধ উৎপাদন গাভীপ্রতি ৪ দশমিক ৫ লিটার।
 
প্রতিটি খামারেই স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অদক্ষ লোক দিয়ে পরিচালনা করার প্রমাণ পেয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। যাদের খামার করার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই এমন লোক দিয়েই পরিচালনা করা হচ্ছে দুগ্ধ খামার। ফলে প্রতি বছরই লোকসান গুণতে হচ্ছে। মূলত স্বজনপ্রীতিতে ডুবেছে খামারগুলো এমন অভিযোগ সাব-কমিটির।
 
মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভকেট মীর শওকত আলী বাদশা বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি খামারগুলোর লোকসানের কারণ অনুসন্ধানে আমরা সাব-কমিটি গঠন করেছিলাম। সেই সাব-কমিটির তদন্তেই বেরিয়ে আসছে খামার অব্যস্থাপনার চিত্র। আমরা সাব-কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পুরোটাই গ্রহণ করেছি।
 
তিনি বলেন, খামারের অব্যবস্থাপনা দূর করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে খামার ব্যবস্থাপকদের নিয়ে একটি বৈঠক করে লোকসানের কারণ ও প্রতিকার খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরিচালকের নেতৃত্বে আরো একটি কমিটিকে কাজ করতে বলা হয়েছে।
 
অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায় এর সঙ্গে একাধিকার ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলে ফোনে খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠালেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
 
গত রোববার (১৩ ডিসেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১২তম বৈঠকে তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। সাব-কমিটির প্রতিবেদনের একটি কপি বাংলানিউজের কাছেও রয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
এসএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।