ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বৃহৎ অঙ্কের ঋণ পর্যবেক্ষণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডাটাবেইজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
বৃহৎ অঙ্কের ঋণ পর্যবেক্ষণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডাটাবেইজ

ঢাকা: আদায় বৃদ্ধি করতে বৃহৎ অঙ্কের ঋণ পর্যবেক্ষণে ‘সেন্ট্রাল ডাটাবেইজ ফর লার্জ ক্রেডিট’ (সিডিএলসি) চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই ডাটাবেইজে তথ্য পাঠাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল স্টাবিলিটি বিভাগ।

প্রজ্ঞাপনটি সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিশ্বমানের নীতি অনুসরণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণ শৃঙ্খলা ও আদায় কার্যক্রম জোরদার করতে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিতরণ করা ঋণের মধ্যে একটি অংশ খেলাপি হয়ে যাচ্ছে, ফলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আয়, মুনাফা ও তারল্য কমিয়ে দিচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে সামষ্টিক অর্থনীতিতে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বড় অঙ্কের ঋণ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি। বড় অঙ্কের এক গ্রাহক সমস্যায় পড়লে কয়েকটি ব্যাংক সমস্যাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। এতে সামগ্রিক অর্থনীতি অস্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে। তাই বড় ঋণকে গুরুত্বসহকারে মনিটরিংয়ের জন্য পৃথক ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

উল্লেখ আছে, সুসংগত কাঠামোর মাধ্যমে বৃহৎ অঙ্কের ঋণ পর্যবেক্ষণের জন্য সিডিএলসি চালু করা হলো। এতে বড় অঙ্কের ঋণ সমস্যাগ্রস্ত হওয়ার আগে নজরে আসবে। দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে বড় অঙ্কের ঋণগুলোকে নিয়মিত রাখা অনেক সহজ হবে। সিডিএলসি চালুর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিপর্যয় রোধ করা।

দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যাগ্রস্ত বড় ঋণ চিহ্নিত করার এই প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলোকে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদান করতে হবে। মূলত ৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণ এই ডাটাবেইজে অন্তর্ভুক্ত হবে। বড় ঋণগ্রহীতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার যাবতীয় কাগজপত্র সিডিএলসিতে দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে ঋণের ধরনের যেমন স্ট্যান্ডার্ড ১, ২ এবং নিম্ন এই তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে ঋণের তথ্য দিতে হবে। বিশেষ করে নিম্নমানের স্ট্যান্ডার্ড ঋণের ক্ষেত্রে গ্রাহকের আর্থিক সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের সিডিএলসিতে পাঠাতে হবে। কিস্তি পরিশোধে ৩০ দিন দেরি হলে তাকে নিম্নমানের ঋণ বলা হয়েছে এই সিস্টেমে। এটি হলে স্টক রিপোর্ট, আর্থিক প্রতিবেদন ও অডিট রিপোর্ট পাঠাতে হবে।

এই ডাটাবেইজে ডিসেম্বর থেকেই তথ্য প্রদান করতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথমবার রিপোর্ট দিতে হবে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। জানুয়ারি ভিত্তিক দ্বিতীয়বার রিপোর্ট দিতে হবে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে। পরবর্তী প্রতিমাসের রিপোর্ট মাসের শেষ দিনের মধ্য অবশ্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দাখিল করতে হবে।

বৃহৎ অঙ্কের ঋণ নিম্নমান পরিলক্ষিত হলে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটি ও বোর্ডের পরিচালকদের পদক্ষেপ নিতে হবে। সন্দেহ হলেই গ্রাহকের যাবতীয় আর্থিক কার্যক্রম নজর রাখতে হবে। ঋণ আদায়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। সিন্ডিকেট ঋণ হলে যৌথ কমিটি (জেটিএফ) গঠন করতে হবে। এছাড়া পরিচালকরা ঋণের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেবেন এবং সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নেবেন। গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানে যাবতীয় তথ্য যেমন- জাতীয় পরিচয়পত্র, কোম্পানির কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
এসই/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।