ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

৫ মাসে কৃষি পণ্যের রফতানি কমেছে ৫১৩ কোটি টাকা

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপেন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৫
৫ মাসে কৃষি পণ্যের রফতানি কমেছে ৫১৩ কোটি টাকা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: কৃষি প্রধান দেশ বাংলাদেশ। অথচ চলতি অর্থবছরের (জুলাই-জুন) প্রথম পাঁচ মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কৃষি পণ্য রফতানি কমেছে ৫শ’ ১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।



অন্যান্য পণ্যের রফতানি যখন ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে এগুচ্ছে তখন কৃষি পণ্যের রফতানি নিম্নমুখী বলে জানা যায় বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে।

২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে কৃষি পণ্যের রফতানি কমেছে ২৩ দশমিক ৬২ শতাংশ।

ইপিবি থেকে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে কৃষিজাত পণ্য রফতানি হয়েছে ২১৫ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন (২১.৫৭৭ কোটি) ডলার। অথচ ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে কৃষি পণ্যের রফতানি আয় ছিল ২৮২ দশমিক ৫১ মিলিয়ন (২৮.২৫১ কোটি) ডলার।
 
চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৬৬ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের কৃষি পণ্যের রফতানি কমেছে। যার মূল্যমান ৫১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এই সময়ে দেশের মোট রফতানিতে কৃষিজাত পণ্যের অবদান ছিলো ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

চা, সবজি, তামাক, ফুল, ফল, মসলাসহ বিভিন্ন শস্য কৃষি পণ্য হিসেবে বিদেশে রফতানি হচ্ছে।

সচেতনতার ‍অভাব ও আমলাতান্ত্রিক অবহেলার কারণেই কৃষি পণ্যের রফতানি কমছে বলে মন্তব্য ইপিবি’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা কৃষির সঙ্গে জড়িত থাকলেও রফতানির ক্ষেত্রে কৃষি পণ্যকে আশানুরূপ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। পোশাক, চামড়াসহ বিভিন্ন পণ্যের রফতানি বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের মিশনগুলোর দেশের বাইরে তোড়জোড় লক্ষ্য করা গেলেও কৃষি পণ্যের বিষয়ে তাদের তেমন কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়ে না।

তিনি বলেন, বিদেশে বিভিন্ন পণ্যের রফতানি বৃদ্ধির জন্য মেলাসহ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হলেও কৃষি পণ্যের কোনো প্রচারণা হয় না। ফলে অবহেলা, অসেচতনতায় চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত বছরের জুলাই-নভেম্বরের তুলনায় ৫১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা রফতানি কমেছে।

এসব বিষয়ে ইপিবি’র সহ-সভাপতি শুভাশিষ বসু বাংলানিউজকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে কৃষি পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে সেনেটারি সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারণ অনেক সময় পণ্য রফতানির পর খবর পাওয়া যায় এতে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে।

এদিকে সাময়িক সময়ের জন্য ইউরোপে পান রফতানি বন্ধ রয়েছে। এসব কারণে দেশের কৃষিজাত পণ্যের রফতানি কিছুটা কমেছে।

তবে যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও রাশিয়ায় কৃষিজাত পণ্যের রফতানি বৃদ্ধিতে ইপিবি থেকে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান শুভাশিষ বসু।

ইপিবি থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কৃষিজাত পণ্যের রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা যেমন অর্জন হয়নি ঠিক তেমনি, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের তুলনায় রফতানিও কমেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কৃষি পণ্যের রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ কম হয়।

একইভাবে আগের বছরের তুলনায় রফতানি কমেছে ৪ দশমিক ৭২ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের কৃষি পণ্যের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৬৭৬ দশমিক ১৪ মিলিয়ন (৬৭.৬১৪ কোটি) ডলারের বিপরীতে আয় হয় ৫৮৬ দশমিক ০৫ মিলিয়ন (৫৮.০৫ কোটি) ডলার। আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে কৃষি পণ্যের রফতানি আয় ছিলো ৬১৫ দশমিক ০৮ মিলিয়ন (৬১.৫০৮ কোটি) ডলার।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৫
ইউএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।