ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কনটেন্ট-কানেক্টিভিটির জন্য ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৬
কনটেন্ট-কানেক্টিভিটির জন্য ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে ছবি: রানা / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিদায়ী বছরে দেশের বাজারে স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে ৬০ লাখ। চলতি বছরে ৯০ লাখ স্মার্টফোন বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৯০ শতাংশই স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে কনটেন্ট-কানেক্টিভিটির জন্য ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে।  
 
তবে দেশি-বিদেশি সকল মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ডিভাইসের দাম ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
 
শনিবার (০৯ জানুয়ারি) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র  স্মার্টফোন ও ট্যাব মেলায় ‘ডিজিটাল কনটেন্ট ও কানেকটিভিটি’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন অতিথি আলোচকরা। তৃতীয় ও শেষদিনের মেলায় ডিজিটাল কনটেন্ট ও ইন্টারনেট সংযোগ বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরতেই এ সংলাপের আয়োজন।
 
সংলাপে আলোচকরা আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে উচ্চ গতিসম্পন্ন ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগের পাশাপাশি প্রাত্যহিক জীবন-যাপনের অপরিহার্য বা প্রয়োজনীয় প্রচুর কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। তাই ইন্টারনেট এবং ডিভাইসের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর প্রয়োজন ও চাহিদাকে ডিজিটাল সেবায় পরিণত করতে হবে। তার জন্য দরকার সমন্বিত পরিকল্পনা এবং উদ্যোগ।
 
সংলাপে দেশের মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বলেন, আমাদের অবশ্যই সুলভ মূল্যে স্মার্ট ডিভাইসের যোগান দিতে হবে ক্রেতাকে। কারণ স্মার্ট ডিভাইস (স্মার্টফোন) এখন আর শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম না। এতে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের নানা অনুষঙ্গ যুক্ত হয়েছে।  
 
দেশে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যদি কানেক্টিভিটি (ইন্টারনেট) দিতে চাই। তার আগে অবশ্যই আমাদের হাতে স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবস্থা করতে হবে। কনটেন্টতো অবশ্যই জরুরি।
 
পাঁচ বছর আগে আমদানি করা মোট মোবাইল ফোনের মাত্র এক শতাংশ ছিল স্মার্টফোন। উল্লম্ফন গতিতে তা বেড়ে চলেছে। শুধু ২০১৪ সালেই স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ। গত বছর তা বেড়ে ৬০ লাখে দাঁড়িয়েছে। এ গ্রোথটা অব্যাহত থাকলে চলতি বছর ৯০ লাখের ওপরে স্মার্টফোন বিক্রি হবে বলে আশা করি।
 
দেশের বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন জরিপে দেখেছি, দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৯০ শতাংশই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। গ্রামীণফোনের হিসেবে স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবহারের গ্রোথ এখন ১৯ শতাংশ। আমাদের আসলে ইন্টারনেট পেনিট্রেশন বেড়েছে। এর সঙ্গে কনটেন্টও বাড়াতে হবে। অবশ্য এ কনটেন্ট বাড়াতে শুধু একটি অপারেটর কাজ করলে হবে না। সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
 
গ্রামীণফোন আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার স্টেশনকে থ্রি-জি স্টেশনে রূপান্তর করবে বলেও সংলাপে উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।
 
ডিজিটাল হাইওয়ের (মহাসড়ক) প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের সভাপতি রাশেদ মেহেদী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরা কানেক্টিভিটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু সেই কানেক্টিভিটি কতোদিন সচল থাকবে বা এর উন্নয়ন ঘটাতে হবে সে সম্পর্কে এখনো আমরা অজ্ঞতার মধ্যে রয়েছি।

আমাদের সবই আছে। ফাইবার অপটিক ক্যাবল কারখানা আছে,  আছে পর্যাপ্ত অবকাঠামো সুবিধা। আসলে আমাদের একটা ডিজিটাল হাইওয়ে দরকার। আর তা বাস্তবায়নে সরকারকে আরো সক্রিয় হতে হবে।
 
ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোকে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে মাইক্রোসফটের বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সোনিয়া বশির কবির বলেন, আমাদের কাজ করতে হবে মানুষের প্রয়োজন বুঝে। তাই শুধু কনটেন্ট ডেভেলপ করলেই হবে না। এর সঙ্গে অবশ্যই আমাদের কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করতে হবে।
 
বেসিস’র সভাপতি শামীম আহসান বলেন, কনটেন্ট ও কানেক্টিভিটির জন্য অবশ্যই আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। এটা যেমন এককভাবে কোনো মোবাইল অপারেটর কোম্পানির ক্ষেত্রে সম্ভব না, তেমনি একটি ইন্ডাস্ট্রির জন্যও নয়।
 
আমরা বেসিস থেকে ইন্টারনেট পেনিট্রেশন বাড়াতে গত বছর ‘ইন্টারনেট উইক’ আয়োজন করেছি। লক্ষ্য ছিল দেশে প্রতি বছর এক কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাড়ানো। অবশ্য এর জন্য আমাদের কনটেন্ট বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি।
 
ভবিষ্যতে নিরাপত্তার অজুহাতে সরকার ইন্টারনেট কিংবা যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
 
সংলাপ সঞ্চালনা করেন বাংলদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।  
 
‘ডিজিটাল কনটেন্ট ও কানেক্টিভিটি’ শিরোনামে সংলাপ শুরু হয় গ্রামীণফোনের ডিজিটাল ও ডিভাইসের জেনারেল ম্যানেজার মুনতাসির হোসেনের একটি প্রেজেন্টেশনের মধ্য দিয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৬
এমএইচপি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।